পরী দ্বারা ধর্ষন - রহস্যময় অদৃশ্য ধর্ষন (season_4, part_26 - part_32 )
part_26
season_4
কাহিনিটা সিম্পল বিষয়,, সবার মতন চিল্লাচিল্লি শুনে স্নেহা আর বাবু যায় ঐ ফ্লাটে ঘুম থেকে উঠে।
বাবু যাওয়ার সাথে সাথে বাবুকে দেখা মাত্র জ্বীন মাসে অশরীরীটা ভয়ে আতংকে জড়সড় হয়ে মাফ চেয়ে চিরতরে চলে যায় মহিলার শরীর থেকে।
আর এটা দেখেই বাকিরা,,,,
যাক আপাতত ঘুমানো দরকার, সবাই ক্লান্ত পরিশ্রান্ত ।
শোয়ার সাথে সাথে ঘুমিয়ে গেলাম, ঘুম ভাঙলো হট্টগোলে আর উঠে দেখি ভোর হয়ে গেছে,, আজান হয়তোবা দিয়ে দিছে।
কিন্তু বাহিরে অনেক মানুষের কথাবার্তার শব্দ শুনতে পেলাম।
মনে হচ্ছে শত শত মানুষ বাহিরে দাড়িয়ে আছে আর সবাই দরজা খুলতে আকুল আবেদন জানাচ্ছেন।
দরজা খুলতেই হুরমুর করে সবাই ভিতরে প্রবেশ করলো।
ঢাকা শহরের ভিতর এমন পরিস্থিতিতে পরতে হবে কখনো কল্পনা করি নাই।
একেকজন একেক জায়গায় বসে বাবুর অপেক্ষা করছে,,বাবুর কাছে কেউ তেল পরা,কেউ ঝাড় ফু কেউ বা পানি পরে নিতে এদের আগমন।
কেউ বা আবার বাবুর সামনে মাথা ঝুকে শুয়ে গরাগরি খাচ্ছে যা দেখে সত্যি মন মেজাজ এতটা বিগড়ে যাচ্ছে যে মনটায় চায় সব গুলারে গুলি করে ঝাঁঝরা করে ফেলি😡😡
কেউ বা আবার ভবিষ্যৎ জানতে মরিয়া হয়ে গেছে।
কেউ বা প্রবাসে থাকা স্বামী, সন্তান কিংবা আত্মীয়ের খোঁজ খবর জানতে চাচ্ছে,কেউ পড়াশোনা কিংবা চাকরি বা ব্যসার পরিস্থিতি জানতে চাচ্ছে, যে আগামীতে কি হবে আর কি করা উচিত।
এদিকে বাবু নিজেও থতমত খেয়ে গেছে এমন অবস্থা দেখে।
রাতারাতি এক রাতের মধ্যে পীর বাবা, পিচ্চি পীর পিচ্চি বাবা, জ্বীনের বাদশাহ একেকজন একেক উপাধি দিয়ে সম্বোধন করছে।
মানুষ কতটা বোকা আর ভুলের মধ্যে রয়েছে তা এদের দেখলে বুঝা যায়।
এদিকে বাবু কিছু সময় নিরবতা পালন করলেও আস্তে আস্তে পানি পরা, ঝার ফুক বা তেল পরা দিতে শুরু করলো।
আমিও ওর কান্ড দেখে তাজ্জব হয়ে যাচ্ছি।
স্নেহা তো বারবার সবাইকে সরিয়ে দিতে মরিয়া হয়ে গেছে,, আমিও চেষ্টা কম করি নাই।
অনেকেই এসে ছবি তুলে তা বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আপলোড করার চিন্তা ভাবনা নিয়ে ছবি তুলতে গিয়ে আরেক ধাক্কায় অবাক হচ্ছে আর এদের অন্ধবিশ্বাস কুসংস্কার আরো বৃদ্ধি পাচ্ছে।
ছবি তুলতে গিয়ে বাবুর কোন ছবি শো করে না গ্যালারি তে,,মানে ছবি উঠে না।
এটা মোটামুটি আবার নতুন করে ভাইরাল হয়ে গেল পুরো বাড়িতে,, এখন শুধু বাড়ি না,,পুরো মহল্লার মধ্যে হইচই লেগে গেছে।
একে একে পুরো বাসা মৌমাছির মতন ঘিরে ফেলেছে।
কত মানুষের কতনা আবদার, কতই না অভাব, কইনা চাহিদা, কতই না বাসনা।
সব যেন এখন বাবুর পায়ের কাছে ফেলে কান্নাকাটি জুড়ে দিছে।
এদিকে এই খবর ভাইরাল হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের কাহিনী গুলো নিয়ে আবার মাতামাতি শুরু হল।
এখন অতিত বর্তমান দুই মিলিয়ে ঘোলাটে পরিবেশ হয়ে যাচ্ছে,, দু’য়ের সংমিশ্রনে ভবিষ্যৎ নিয়ে গবেষনা চলছে সবার মনে।
আগামীতে যে নেতা হবে বাবু তার আবাস এখুনি পাচ্ছি ক্লিয়ার করে, কিন্তু আমি নিজে থেকে এমন নেতা চাচ্ছি না,যেখানে নেতা মানতে গিয়ে সবাই ধর্ম ঈমান হারাবে, ধংস হয়ে যাবে সবাই।
জাহান্নামের দিকে ধাবিত হবে সে রকম নেতা চাই না।
দিন যতই এগিয়ে যাচ্ছে ততই মানুষের আনাগোনা বাড়ছে, মহূর্তের মধ্যে বাসার নিচে অস্থায়ী বাজার বসে গেল,, তাহলে একবার চিন্তা করে দেখুন কত মানুষের আনাগোনা চলছে বাসা জুড়ে।
না চাইতেও তারাই আমাদের ফ্লাটের দরজার কাছে বাক্স বানিয়ে সেখানে টাকার পাহাড় করে ফেলেছে হাদিয়া দিয়ে।
মোটামুটি প্রায় লাখ দুই হবে এত টাকা শুধু একদিনেই হাদিয়া চলে এসেছে।
মানুষ কতটা পাগল আর বোকা টের পাচ্ছি হারে হারে, এমন করেই সাধারণ মানুষের পাগলামি আর ভুলের জন্য অন্ধবিশ্বাস কুসংস্কারের জন্য সমাজের মধ্যে কিছু অসাধু লোক মানুষের সাথে মিথ্যা প্রতারণা করে পীর দরবেশ সেজে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নেয় কিছুদিনের মধ্যে আর নেওয়া শেষ হলে লাপাত্তা।
নাহহহহ আমার আর সহ্য হচ্ছে না এসব।
সারাদিন বাসার ভিতরেই নামাজ পড়লাম,,বাহিরে যাওয়ার চান্স পাচ্ছি না,, পাচ্ছি না বললে ভুল হবে আসলে যাচ্ছি না।
কি জানি কি না কি সমস্যা হয়ে যায় সেই ভয়ে।
।
রাত ১২ টার দিকে অনেক কষ্টে ঠেলেঠুলে লোকজন বের করলাম ফ্লাট থেকে।
এদিকে ফ্লাটের মালিক মানে বাসার মালিক চাইলেও কিছু বলতে পারছে না,,উনিও এসব বিষয় মানতে পারছেন না কিন্তু ভয়ে কোন কথাও বলতে পারছেন না।
এদিকে বাড়ির অন্য সব ভাড়াটিয়াদেরো সেম অবস্থা।
তাদের চলাচলে অসুবিধা হচ্ছে প্রচুর।
সারাদিনের ক্লান্তি আর দকলে ঠিক মতন কেউ খেতেও পারি নাই,,,
রাতের খাবার খেলাম ১২ টার পরে।
স্নেহাকে নিয়ে আলোচনায় বসলাম।
এর মধ্যে স্নেহার আব্বুকেও ডেকে পাঠিয়েছি,বিষয়টা এমন হলে বাবুর ভবিষ্যৎ অন্ধকার। তাছাড়া মানুষের অন্ধবিশ্বাস আমার ভাল লাগছে না।
এভাবে টাকা পয়সার ক্ষতি হবে মানুষের তাও চাচ্ছি না।
তাছাড়া বাবু তো এখনো ছোট, কোন বাবা মা ই চাইবে না এটা।
যাইহোক স্নেহার আব্বু সহ কয়েকজন এসে উপস্থিত হলেন।
আলোচনায় বসা হল পরিস্থিতি নিয়ে,,
এদিকে স্নেহার আব্বুর কথা শুনে মনটা খারাপ হওয়ার সাথে সাথে টেনশনে পরে গেলাম নতুন করে,,
শশুর মশাইঃ- নানু ভাই এর এমন কান্ড বা মানুষের মাতামাতি, অলরেডি সব জায়গায় ছড়িয়ে পরেছে,,এবং কি কিছু শত্রুর মধ্যেও ছড়িয়ে গেছে যারা এতদিন যাবদ নানু ভাইকে খুজে খুঁজে হয়রান পেরেশান হয়ে আছে।।কিন্তু তারা না চাইতেও পেয়ে গেছে নানু ভাইকে।
আমি গোপন খবরে শুনেছি তারা কয়েকজন জ্বীন আর তান্ত্রিক মিলে নানু ভাইকে তাদের সঙ্গে নিয়ে যেতে ফন্দি আঁটছে,
যদি তোমরা এমন পরিস্থিতি চলতে দাও তাহলে তাদের কাজ আরো সহজ হয়ে যাবে।
তাছাড়া বাকি শত্রুরাও খোঁজ পেয়ে যাবে।
বর্তমানের ঘোলাটে পরিবেশ যদি থাকে তাহলে এই মানুষের বিড়েই কখন কোন শত্রু এসে বাবুকে নিয়ে যাবে তোমরা টেরও পাবে না।
তাছাড়া অলরেডি সারাদিনে কিন্তু অনেক গুলা জ্বীন মানুষের রূপ নিয়ে এসে বাবুর সাথে কথা বলে গেছে, ঝার ফুক নিয়ে গেছে অথচ তোমরা টের পাও নি,,এমনি ভাবেই ওরাও আসবে।
।
আমিঃ- হুমম বুঝতে পারছি সব কিন্তু আমাদের প্রতিকার কি এই অবস্থা থেকে পরিত্রাণ পাওয়ার।
।
স্নেহাঃ- আব্বাজান আমি আর সহ্য করতে পারছি না,, সারাটাদিন বাবুর উপর দিয়ে যা গেছে যদি আপনি দেখতেন😭😭😭
ঠিক মতন খাইতে পর্যন্ত পারে নাই😭😭
।
শশুর মশাইঃ- প্রতিকারের রাস্তা আসলে নেই বললেই চলে। আবার অনেক রাস্তা আছে।
কিন্তু কোনটা সঠিক হবে তা আমিও জানি না।
এরজন্য তুমি নিজেই তো বের করতে পারো রাস্তা,, আমার কাছে জিগ্যেস করার প্রযোজন আছে বলে মনে করি না।
।
আমিঃ- মানে বুঝলাম না,,আমি কিভাবে রাস্তা বের করবো.??
আমি জানলে কি আপনাকে জিগ্যেস করতাম নাকি।.???
।
শশুর মশাইঃ- না জানার মতন কিছু নেই,,
তোমার হাতের আংটিটাই তো সব সমাধানের পথ বের করে দিবে ইনশাআল্লাহ।।।
।
যাহহহ বাবা আমি তো আংটির কথা সম্পূর্ণ ভুলেই গিয়েছিলাম,,,
।
শশুর মশাইঃ- তোমার তো ৪০ দিন শেষ হয়েছে,,
এখন তুমি তোমার আংটি হাতে পাড়তে পারো আর পরে তুমি আজ রাতেই তাহাজ্জুদ নামাজ শেষে দুই রাকাত নফল নামাজ আদায় করবে।
তারপর আংটি হাতে থেকে খুলে মাথায় দিবে আর ইনশাআল্লাহ সব আস্তে আস্তে বেরিয়ে আসবে কি করলে বেটার হবে।
।
উনার কথায় জ্ঞান কিছুটা খুললো,,
উনাকে এমনটাই করবো জানিয়ে সেদিনের মতো বিদায় দিলাম।
রাতে তাহাজ্জুদ পড়ে দুই রাকাত নফল নামাজ শেষে আংটি খুলে মাথায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আমার ধারনা সব পাল্টে গেল,, আমি অন্য এক দুনিয়ায় চলে যাচ্ছি।
দিনদুনিয়া সব উলটপালট হয়ে যাচ্ছে।
বৃত্তাকারে আমি ঘুরছি নাকি দুনিয়া ঘুরছে নাকি আমার মাথা ঘুরছে তা জানি না।
মাথায় প্রচন্ড ভার আর চাপ অনুভব করছি।
মাথা ফেটে যাচ্ছে,, রক্ত বেরিয়ে আসছে মাথা দিয়ে।
বনবন করছে মাথা,,চিৎকার করতে না চাইতেও যন্ত্রণায় চিৎকার আপনা-আপনি বেরিয়ে আসছে যদিও সেই চিৎকারের শব্দ অন্য কারোর কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
যতদুর মনে পরছে এটা যার আংটি না তার ক্ষেত্রেই এমন হওয়ার কথা,, তাহলে কি এই আংটির মালিক আমি নই..?
চারিদিক থেকে শত শত জ্বীন বা ভুতপ্রেত হাতে দা নিয়ে এগিয়ে আসছে, সবাই ভয়ংকর ভয়ানক দানব আকৃতির যা আগে কখনো দেখি নাই।
এতটা ভয় পাচ্ছি যা বলার বাইরে।
এমন সময় হঠাৎ করেই,,,.??
part_27
season_4
মাথায় প্রচন্ড ভার আর চাপ অনুভব করছি।
মাথা ফেটে যাচ্ছে,, রক্ত বেরিয়ে আসছে মাথা দিয়ে।
বনবন করছে মাথা,,চিৎকার করতে না চাইতেও যন্ত্রণায় চিৎকার আপনা-আপনি বেরিয়ে আসছে যদিও সেই চিৎকারের শব্দ অন্য কারোর কান পর্যন্ত পৌঁছাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে না।
যতদুর মনে পরছে এটা যার আংটি না তার ক্ষেত্রেই এমন হওয়ার কথা,, তাহলে কি এই আংটির মালিক আমি নই..?
চারিদিক থেকে শত শত জ্বীন বা ভুতপ্রেত হাতে দা নিয়ে এগিয়ে আসছে, সবাই ভয়ংকর ভয়ানক দানব আকৃতির যা আগে কখনো দেখি নাই।
এতটা ভয় পাচ্ছি যা বলার বাইরে।
এমন সময় হঠাৎ করেই কোথায় থেকে যেনো চারটা দরবেশ টাইপের লম্বা জুব্বা আলখেল্লা পরিহিত লোক দেখতে পেলাম,,যদিও ঘোরের মধ্যে আছি তবুও স্পষ্ট আতরের ঘ্রাণ পাচ্ছি।
চারজনেই একই সমান লম্বা সাধারণত মানুষের চেয়ে লম্বা,,কিছুটা আরব দেশ গুলোর মতন দেখতে।
চমৎকার সুন্দর ফর্সা আর সুঠাম গায়ের অধিকারী।
এদের হাতে খোলা তরবারি আর সেই তরবারি সহ উনাদের দেখেই পিশাচ টাইপের ভুতপ্রেত বা জ্বীন গুলো ভয়ে পালিয়ে গেল,চার-পাঁচটা এগিয়ে এসেছিল তাদের মাথা শরীর থেকে আলাদা করে ফেললো।
রক্তাক্ত দেহ মাটিতে লুটিয়ে পড়লো।
তারপর সেই দরবেশ টাইপের লোক গুলো কাছে এসে তাদের মধ্যে একজন বললেন,,
।
দরবেশ টাইপের লোকঃ- জাঁহাপনা আপনাকে অভিনন্দন।
আজ থেকে আমরা আপনার গোলাম জাঁহাপনা।
আমরা দীর্ঘ হাজার বছর যাবদ আপনার জন্য অপেক্ষা করছি।। আজ থেকে আমরাও মুক্ত আর আপনাকেও সব সময় পাহারা দেওয়ার আপনার উপকার করার দ্বায়িত্ব আমাদের।
আপনি অনুমতি দেন,হুকুম করেন আমরা আপনাকে কিভাবে সাহায্য করতে পারি..?
।
আমি কি বলবো সত্যিই ভেবে পাচ্ছিলাম না।
কেমন জানি সত্যি আর মিথ্যার মাঝের ভেরা জালে আটকে রইলাম।
কিছুটা ভয় ও পাচ্ছি।
যাইহোক ভয়কে জয় করে বলতে শুরু করলাম,,
আমিঃ-আমি আমার ছেলেকে নিয়ে সমস্যার মধ্যে আছি,,
পরে বিস্তারিত বলার পর জিগ্যেস করলাম এখন এই পরিস্থিতিতে বাঁচার উপায় কি.??
।
দরবেশের মধ্যে একটাঃ-জনাব, আপনার সব চেয়ে বেশি ভালো হবে আপনি আপনার উর্ধতন কর্মকর্তার সাথে কথা বলে দেশ ছেড়ে অন্য কোন দেশে গিয়ে চাকরি করেন।
মানে হচ্ছে একই চাকরি করবেন কিন্তু দেশের সার্থে দেশের বাহিরে,,কারন বাহিরেও অনেক ক্রিমিনাল লুকিয়ে আছে তাদের গ্রেফতার করে দেশে ফিরিয়ে আনা,চোরাচালানের দালালদের মুখোশ উন্মোচন করা, মাফিয়াদের কুচক্র মহলের আসল রুপ বাহির করে আনা,, মাদক ও অন্যান্য বিষয়ের সাথে জড়িতদের আইনের আওতায় এনে শাস্তি প্রদান করা ইত্যাদি কাজের হয়ে দেশের বাহিরেও যে মিশনের কাজে ডিবির সোর্স আছে তাদের হয়ে কাজ করার জন্য একটা দরখাস্ত লেখেন,,বাকিটা আমরা করে দিবো ইনশাআল্লাহ।
আপনার এক দিনের মধ্যে সব ক্লিয়ার হবে, যে কোন একটা দেশ চয়েস দিয়ে রাখেন ইনশাআল্লাহ সেইটাই হবে।
তবে আমার মতে আপনি আফ্রিকার কোন দেশকে চয়েস করুন কারন আফ্রিকা থেকে অস্ত্র সহ মাদক ও চোরাচালানের বড় একটা ঙ্যাং কাজ করে এ দেশের কিছু কুক্ষাতো ভদ্রলোকের মুখোশ পরে শয়তান মানুষ।
বাকিটা আপনার ইচ্ছে,,,
।
আমিঃ- এক্ষেত্রে কি সমাধান হবে.??
তাছাড়া আমার পরিবার.??
।
আরেকজনঃ- সেক্ষেত্রে আপনার সকল সমস্যার সমাধান হবে ইনশাআল্লাহ।
আর পরিবারের সবাই বলতে বাবা মা ছাড়া সবাই তো সেখানেই থাকবেন।
নতুন জায়গায় নতুন পরিবেশে কেউ স্পর্শ বাবার সম্পর্কে জানবেও না আর নতুন কোন সমস্যার মধ্যেও পরতে হবে না।
আর আপনার বাবা মাকে সময় সুযোগ বুঝে সেখানে নিয়ে যাবেন।
।
এতটুকু বলেই উনারা আর কোন কথা বলার সুযোগ না দিয়ে বিদায় নিলেন।
আমিও স্বাভাবিক হতে শুরু করলাম,,
কিছু সময় লাগলো স্বাভাবিক হতে,,আস্তে আস্তে মাথা থেকে আংটিটা ছোট হতে হতে আংটিতে পরিনত হচ্ছে।
আমারো ঘোর কাটতে শুরু করলো।
পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেলাম।
যদিও কিছুটা ঝিম ঝিম করছে মাথাটা।
চোখ খুলতে কিছুটা কষ্ট হলেও আস্তে আস্তে চোখ খুললাম,,চোখ খুলে অবাক,,,স্নেহা আর বাবু দুইজনে আমার সামনেই দাড়িয়ে আছে।
হা করে তাকিয়ে আছে।
কিছুটা অবাক আর ভয় দুইটাই ওদের চোখে মুখে পরিষ্কার ফুটে উঠেছে।
।
স্নেহাঃ- কোন সমস্যা হচ্ছে তোমার..?
আমি কিন্তু সত্যি সত্যি ভয় পাচ্ছি। (ঢোক গিলতে গিলতে)
।
আমিঃ- নাহহহহ কোন সমস্যা নেই তবে মাথাটা একটু ঝিমঝিম করছে।
তাছাড়া সব ক্লিয়ার,,,
।
স্নেহাঃ- ওহহহ আচ্ছা,, কিন্তু তুমি এতক্ষণ তো তোমার যে অবস্থা হচ্ছিল যে অবস্থায় ছিলে তাতে দেহ থেকে প্রাণ বেরিয়ে যাচ্ছিল।
।
আমিঃ- কি রকম হচ্ছিল 🙉🙉
।
স্নেহাঃ- তোমার মুখ দিয়ে কোন কথা বের হচ্ছিল না।তুমি শুধু গোঙ্গানির মতন শব্দ করছিলে।
গোঙ্গাচ্ছিলে,,আর হাত-পা ছুটাছুটি করছিলে।
তোমাকে অনেক্ক্ষণ যাবদ ডাকাডাকি করার পরেও কোন সাড়াশব্দ কিংবা ইশারাতেও ভ্রুক্ষেপ করছিলে না,মোট কথা বলতে পুরোটাই ভিন্ন রকম হয়ে গেছিলে।
।
আমিঃ-কিন্তু আমি তো কথা বলতেছিলাম,,
পরে সব ক্লিয়ার করে বললাম।
স্নেহা জিগ্যেস করছে এখন করনীয় কি.??
মানে এখন তাহলে কি করবো,, উনাদের কথা কি মেনে নিবো নাকি অন্য কোন পথ বের করবো.??
আমি জানি বা আমার মাথায় যতটুকু আসছে তাতে উনাদের কথাই রাইট আর উনাদের কথা মতন চললেই এই পরিস্থিতি থেকে হয়তোবা মুক্তি পেতে পারি যদি আল্লাহ পাক চান,,কিন্তু মুখে বলা যতটা সহজ,,কাজে ততটাই কঠিন।
আমি চাইলাম আর আমাকে মিশন দিয়ে পরিবার সহ দেশের বাহিরে পাঠিয়ে দিবে সরকার এমনটা ভাবা পাগলামি ছাড়া আর কিচ্ছু না।
যাইহোক রাতটা কেটে গেল টেনশনে।
সকাল হলেই কি না কি হবে আল্লাহ পাক ভালো জানেন।
।
ফজরের নামাজের জন্য মসজিদে চলে গেলাম।
নামাজ পড়া শেষ করে বাসায় এসে নিজের বাসায় নিজেই যেতে পারছি না,,ফ্লাটে ঢুকা তো দূরের কথা, সিঁড়ি দিয়েই উঠতে কষ্ট হচ্ছে।
লোকে লোক খাচ্ছে এমন অবস্থা।
ধুররর রাগে মাথা নষ্ট হয়ে গেল, রাগ দেখিয়েই বা কি লাভ.??
বাসা ই গেলাম না আর, সোজা অফিসের দিকে হাঁটা শুরু করলাম,,সময় যেহেতু অনেক আর সময় কাটানোর মতোও জায়গা পাচ্ছি না তার মধ্যে রাগে মাথা ফেটে যাচ্ছে তাই সব মিলিয়ে হেঁটেই রওনা দিলাম অফিসের উদ্দেশ্যে।
হাটতে হাঁটতে রাস্তা শেষ অফিসের কাছে চলে এসেছি কিন্তু মাত্র বাজে ৭.১৫
৮.৩০ এর আগে অফিস খুলবে না।
তাই হোটেলে গেলাম কিছু খাওয়ার জন্য।
পরিচিত হোটেল,,স্টাফ এসে অর্ডার নিয়ে গেলো।
দুইটা পরোটা আর গরুর মাংস ভূনা অর্ডার করলাম।
খেতে বসেও খাওয়াতে মন বসছে না।
টেনশনে গলা দিয়ে খাবার নামছে না।
কোন মতে খেয়ে বেরিয়ে আসলাম।
নাহহহহ সময় কোন ভাবেই যাচ্ছে না।
হঠাৎ স্যারের ফোন,,,
আমিঃ- আসসালামু আলাইকুম।
।
স্যারঃ- ওয়া আলাইকুমুস সালাম।
কৌশিক সাহেব,, আপনার জন্য একটা সুখবর আছে,
।
এমন দূরসময়ে কোন সুখবর আসতে পারে তা কল্পনাতিত।
যদিও বিশ্বাস হচ্ছে না তবুও জিগ্যেস করলাম,,
আমিঃ-জি স্যার কিসের সুসংবাদ.?
।
স্যারঃ- আগে ট্রিট দেন তারপর বলবো।
(স্যারের সাথে ফ্রেন্ডলি সম্পর্ক হওয়ায় মজা করে কথাটা বললেন)
।
আমিঃ- আগে বলবেন তো নাকি.. স্যার..?
আর খাওয়া তো স্বাভাবিক বিষয়,,এমনিতেই আসেন আমি অফিসের সামনের হোটেলের কাছাকাছিই আছি আপনি চলে আসেন।
।
এরপর আসতেছে বলে ফোন কেটে দিলেন।
স্যার কি বলবেন সে বিষয়ে কোন চিন্তা ভাবনা নেই আমার মধ্যে।
টেনশনে আছি বাসা নিয়ে,, না জানি ওদের কি অবস্থা।
ফোন করেও পাচ্ছি না,, হয়তো রিসিভ করতে পারছে না।
যাইহোক কিছু সময়ের মধ্যে স্যার চলে আসলেন।
তার আগেই আমি হোটেলে অপেক্ষা করছি উনার জন্য।
স্যার এসে বসলেন আমার সামনে,,বসেই অর্ডার করলেন এত এত খাবার,,
উনার অবস্থা দেখে ক্লিয়ার হলাম সত্যি কোন সুখবর আছে না হয় এমনটা করতো না।
যদিও এর আগেও স্যার আমার অনেক টাকা খসিয়েছেন,, একটু পেটুক টাইপের তো তাই।
যাইহোক খেতে খেতে বলতে শুরু করলেন,,
।
স্যারঃ- কৌশিক সাহেব,,আপনার কপাল তো খুলে গেছে।
বাংলাদেশ ডিবি সোর্স থেকে থেকে ইন্টারন্যাশনাল (........) সি আই ডি ফোর্সে মিশনের জন্য কিছু অফিসারের নামের লিস্ট এসেছে।
সেখানে আমাদের ঢাকা বিভাগ থেকে তিনজন অফিসার সহ ১২ জন সাধারণ সদস্য সহ মোট ১৫ জনের নামের মধ্যে আপনাকে প্রধান হিসেবে নাম এসেছে।
আমি যতদুর জানি তাতে আফ্রিকার কোন এক দেশে মিশনে যেতে হবে তাও আগামী বৃহস্পতিবার।
আজ তো রবিবার তাই আর মাত্র চার দিন বাকি আছে।
আপনার জন্য শুভকামনা রইল।
আপনার পুরো পরিবার সহ সেখানে যেতে পারবেন আবার চাইলে একাও যেতে পারবেন।
শুধু মাত্র আপনার জন্য এ সুযোগটা রয়েছে।
।
এরপর আরো বিস্তারিত বলতে শুরু করলেন।
এদিকে আমার মাথা বনবন করছে।
কেমন জানি অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা আর এখনকার বাস্তবতা হুবহু মিলে যাচ্ছে।
আমার আংটির পাহারাদার চার জ্বীনের মুখে শুনা কথা অক্ষরে অক্ষরে মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যে মিলে যাবে তা ভুলেও ভাবি নাই।
এদিকে ঘোর কাটলো ফোনে,,ফোন রিসিভ করতেই অপাশের কথা শুনে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার অবস্থা কারন ওপাশে ছিল,,,,,,,.???
part_28
season_4
কমন জানি অস্থিরতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
গতকাল রাতে ঘটে যাওয়া ঘটনা আর এখনকার বাস্তবতা হুবহু মিলে যাচ্ছে।
আমার আংটির পাহারাদার চার জ্বীনের মুখে শুনা কথা অক্ষরে অক্ষরে মাত্র কয়েকঘন্টার মধ্যে মিলে যাবে তা ভুলেও ভাবি নাই।
এদিকে ঘোর কাটলো ফোনে,,ফোন রিসিভ করতেই অপাশের কথা শুনে পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ার অবস্থা কারন ওপাশে ছিল সুমিত,,আর সুমিতের কন্ঠে ছিল ভয় আর আর্তনাদের সংমিশ্রণ।
এরকম ভয়ার্তে গলায় এর আগে কখনো কথা বলতে শুনি নি।
হঠাৎ করেই কি এমন হল..?যে এতটা ভয় পাচ্ছে।
আগে থেকে তো কোন সমস্যার কথা শুনি নাই।
আমি সুমিত কে শান্ত করার চেষ্টা করছি ফোনেই কিন্তু সুমিত শান্ত হচ্ছে না এদিকে কি হইছে তাও বলতে পারছে না বলছে না।
সময় যাচ্ছে আর আমার নিজের মধ্যেও ভয় বৃদ্ধি পাচ্ছে।
কি জানি কি সমস্যা,, যেহেতু পুলিশের চাকরি তাই অনেক সময় গুন্ডা বদমাশদের সাথে সমস্যা হয় আর সেই শত্রুতার সূত্রপাত থেকে অনেক কিছুই হয়ে যেতে পারে।
আমি সমস্যার কারন বা কি ঘটছে তা জানতে বারবার জিগ্যেস করার পরেও গলা কাটা মুরগির মতন ধাপড়ানো ছাড়া আর কোন কিছু মানে একটা শব্দ ও বের হল না সুমিতের কন্ঠ থেকে।
কিছু সময় পর ফোনটা কেটে গেল।
কল দিচ্ছি কিন্তু কেউ রিসিভ করছে না।
নাহহহ টেনশনে মাথা ছিঁড়ে যাচ্ছে,, ফোনের লোকেশন ট্র্যাকিং এর মাধ্যমে জায়গা নির্ধারণ করে দ্রুত স্যারের গাড়ি নিয়ে সেখানে চলে গেলাম।
নিচ থেকে বুঝতে পারলাম এটা বাসা,,ঢাকার ভিতরেই মনোরম পরিবেশে আবাসিক ও আধুনিক সকল সুবিধা নিয়ে তৈরি বাসা।
বাসার নিচে থেকে ফোন দিলাম।
কিন্তু এবারো ফোন রিসিভ হচ্ছে না।
স্থানীয় পুলিশ বা প্রশাসনকে কি অবহিত করবো.?
ঠিক বুঝে উঠতে পারছি না।
হঠাৎ করে মন পরলো কয়েকদিন আগে তো সুমিত বলেছিল বাসা চেইন্জ করছে তাহলে কি এটাই সেই বাসা,,মানে এই বাসাতেই কি উঠেছে.?
কিন্তু সমস্যাটা কি হতে পারে.??
যাইহোক লাস্ট বারের মতন নিয়ত করে ফোন দিলাম,,এবার রিসিভ হল।
আমিঃ- সুমিত কি হইছে তোমার তুমি ঠিক আছো তো.??
।
সুমিতঃ- মোটামুটি ঠিক আছি(কাতরাতে কাতরাতে)
।
আমিঃ- আমি মনে হচ্ছে তোমার বাসার নিচেই আছি(ঠিকানা দিয়ে) এটাই কি তোমার বাসা.?
।
সুমিতঃ-জি ভাইয়া এটাই বাসা,,কিন্তু তুমি কি করে জানলে,,,..?
(অবাক হয়ে)
।
আমিঃ- সে কথা পরে হবে আগে বল কত তলায় কত নাম্বার ফ্লাটে থাকো.??
।
সুমিতঃ- ৬ এর বি,,,
।
আমিঃ- আচ্ছা ওয়েট,,,
।
এরপর ফ্লাটে গিয়ে কলিং বেল টিপতেই দরজা খুলে দিল।
সুমিতের সারা শরীর ঘেমে একাকার হয়ে আছে, দেখেই বুঝা যায় চরম পর্যায়ের ভয় পাইছে।
।
আমিঃ-তোমাকে এমন বিষন্ন দেখাচ্ছে কেনো কি হইছে সত্যি করে বলো তো।
।
সুমিতঃ-বাসার খোজ পেলে কিভাবে.??
।
আমিঃ- তোমার ফোন ট্রেক করে,,এখন বল কি হইছে.???
।
সুমিতঃ-তিন দিন আগের কথা, আমি নাইট ডিউটিরত অবস্থায় ছিলাম।
কেমন জানি রাত ২.৪৫ এর দিকে হঠাৎ করে বুকটা চিনচিন করে ব্যাথা অনুভব করলাম।
একটা পর্যায়ে বেশ ভালো ব্যাথা শুরু হল।
সেখানে থাকা কষ্টকর হয়ে গেল।
ড্রাইভারকে বললাম আমাকে বাসায় রেখে যেতে কারন ডিউটি করার মতন অবস্থায় ছিলাম না।
তো ড্রাইভার আমাকে নিয়ে রওনা দিল,,কিছু দূর আসার পরেই গাড়ির চাকা পামছাড় হয়ে যায় তাই গাড়ি করে আর আসা হল না।
ড্রাইভার যদিবা হেটে বাড়ি পর্যন্ত পৌছে দিতে চাইছিল কিন্তু ওরে মানা করে দিলাম অযথা কেনো কষ্ট করবে তাছাড়া ওর তো ডিউটি আছে করতে হবে।
একটু একটু করে এগিয়ে আসছি হেঁটে হেঁটে, কারন জানি এসময় রিক্সা পাবো না।
অটো তো দূরের কথা।
কিন্তু বেশ অবাক হলাম পিছনে থেকে রিক্সার বেলের শব্দ শুনে,,,
এতো রাতে রিক্সা,,,!! অবিশ্বাস্য ব্যাপার কিন্তু তেমন একটা পাত্তা দিলাম না কারন আমার রিক্সার খুবই প্রয়োজন ছিল কিন্তু তখন যদিও বিষয়টা মাথায় আসে নি সেইটা হচ্ছে আমি সিগনাল দেওয়ার আগেই রিক্সা আমার সামনে এসে দাড়ালো,,এই গরমের মধ্যেও রিক্সাওয়ালা চাদরে ঢেকে রেখেছে সারা শরীর,, কিছুটা অবাক লাগলেও পাত্তা দিলাম না।
মূলত রিক্সাটা পাওয়া আর আমাবস্যা রাতে চাঁদ পাওয়া সমান কথা ছিল আমার জন্য।
রিক্সায় চেপে বসি,,রিক্সা চলছে আপন গতিতে।
কিন্তু আমি তো আমার বাসা কোথায় তা একবারো বলি নাই তাহলে সে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে.??
রাস্তা লক্ষ করলাম,, নাহহহ সঠিক রাস্তাতেই আছি।
কিছু দূর যাওয়ার পর শরীরের অবস্থা আরো বেশি খারাপ হচ্ছে তাই চোখ বন্ধ করে আছি,,কিছুক্ষণ পর রিক্সা থেমে যায়,, ভাবলাম হয়তোবা বাসার সামনে এসে গেছি তাই চোখ খুললাম,কিন্তু চোখ খুলতেই মাথা আকাশ ভেঙে পড়লো, কারন এটা আমার বাসার সামনে না,,এটা তো শ্মশান ঘাট,,
আমার বাসায় আসার আগে যে শ্মশান ঘাট দেখেছো সেইটা,,কিন্তু রিক্সাওয়ালা এখানে দাড়ালো কেনো.??
জিগ্যেস করতে যাবো এখানে কেনো থামালো কিন্তু আরেক ধাক্কা খেলাম যখন রিক্সা চালককে জিগ্যেস করতে যাবো তখন তাকিয়ে দেখি রিক্সা চালক আশেপাশে নেই,, চারিদিকে ঝকঝকে চাদের আলো স্পষ্ট দেখা যাচ্ছে সব কিন্তু কোথাও কোন মানুষের নামগন্ধ নেই।
মহূর্তের মধ্যে পালানোর মতন এরকম কোন জায়গা নেই তাহলে কাহিনিটা কি..?
তাকাতাকি করছি, এমনিতেই বুকের ব্যাথাটা বেড়েই চলেছে তারমধ্যে আবার এমন পরিস্থিতি, প্রথমে ভেবেছিলাম হয়তো কোন শত্রুর কাজ হবে এটা,,আমাকে ভয় দেখানোর বা কোন ক্ষতি করার চেষ্টা করছে তাই বুকের উপর একটা হাত রেখে আরেক হাতে রিবালবারটা বের করলাম।
এদিকে বুকের উপর ধুক ধুক ধুক করে শব্দ হচ্ছে যা এই গভীর রাতে স্পষ্ট শুনতে পাচ্ছি।
হাত দিয়েও অনুভব করছি শব্দটা,হৃদপিণ্ডটা লাফাচ্ছে।
হঠাৎ করেই ধুক ধুক শব্দটা বেড়ে গেল অস্বাভাবিক ভাবে। তাহলে কি ব্যাথাটা বেড়ে গেল.??
কিন্তু না নতুন বাড়তি শব্দটা বুকের না,,
শ্মশানের দিক থেকে আসছে শব্দটা,,কান পেতে শুনাতে চেষ্টা করলাম কিসের শব্দ কিন্তু ধুক ধুক শব্দের সাথে কারোর হাঁটার শব্দ শুনতে পাচ্ছি,, না কোন মানুষের হাঁটার না,,ভালো করে লক্ষ করতেই বুঝতে পারলাম এটা কোন ঘোড়ার খুঁড়ের আওয়াজ।
মনে হচ্ছে শত শত ঘোড়া এদিকে ছুটে আসছে আর সঙ্গে ভেসে আসছে কুকুর ও শিয়ালের অস্বাভাবিক ভাবে ডাকাডাকি যা কানকে ঝালাপালা করে দিচ্ছে, বুকের ভিতরটা শিরশির করে উঠলো,,পা কাঁপছে থরথর করে,এই বুঝি অজ্ঞান হয়ে যাবো,এতটা ভয় এর আগে কখনো পাই নি,,ভালো করে শ্মশানের দিকে তাকাতেই দেখি সেখানে একটা লাশ রাখা যা কাফনের কাপড় দিয়ে পেচানো ,,কিন্তু মিনিট খানেক আগেও সেই জায়গাটা একদম শূন্য ছিল, কোন কিছুর অস্তিত্ব ছিল না কিন্তু মাত্র মিনিটের মধ্যেই লাশ আর যে জায়গাটায় লাশ পোড়ানো হয় সেখানে গনগন করে আগুন জ্বলছে,,লাকড়ি দিয়ে আগুন জ্বালিয়ে রেখেছে,,লাশ পোড়ানোর সব কিছু রেডি,,আর শ্মশানের চারিপাশ থেকে আগরবাতির ঘ্রাণ পাচ্ছি, ধোঁয়ায় ছেয়ে গেছে পরিবেশ।
হঠাৎ করেই আচমকা বাতাসে লাশের মুখের উপর থেকে কাফনের কাপড় সরে যেতেই মুখটা বেরিয়ে আসে আর জীবনে যা দেখতে কখনো প্রস্তুত ছিলাম না তাই দেখলাম, যা কখনো কল্পনা করি নাই তাই ঘটলো আমার সাথে কারন লাশটা আর কারোর না,,লাশটা আমার নিজের,,
।
এতটুকু বলেই ভয়ে শিউরে ওঠে সুমিত,,এর আগে সুমিতকে নিয়ে অনেক ভৌতিক রহস্যময় মিশন কমপ্লিট করেছি কিন্তু তখনো এতটা ভয় দেখি নাই সুমিতের কন্ঠে বা চোখে মুখে যা আজ কোন কিছু সামনে ছাড়াই দেখতে পাচ্ছি,, সুমিতের গলা আটকিয়ে গেছে,, আমিই এক গ্লাস পানি এনে দিলাম, সুমিত পান করলো,,আমার স্যার আমার সাথেই ছিল,, এসব শুনে উনি রীতিমতো কাঁপছে,,
পানি খেয়ে আবার বলতে শুরু করলো,,
।
সুমিতঃ- আমি এটা দেখে দিকবিদিকশুন্য হয়ে দৌড়াতে শুরু করলাম,গলা ফাটিয়ে চিৎকার করছি কিন্তু আমার চিৎকার আমি নিজেই শুনতে পাচ্ছি না,অন্য কেউ শোনার প্রশ্নই আসে না।
এদিকে বুকের ব্যাথার কথা ভুলেই গেছি,,একটা সময় পিছনে থেকে অট্টহাসি ভেসে আসলো,,আরো জোরে দৌড়াতে শুরু করলাম,,
একটা পর্যায়ে বাসার সামনে এসে পৌঁছালাম,, গেট খোলা ছিল, যদিও এত রাতে গেট খোলা থাকার কথা না তবুও ভয়ের কারণে ঐসব চিন্তা ভাবনা বাদ দিয়ে তড়িঘড়ি করে বাসায় ঢুকে পরি,,লিফ্টে উঠলাম,,দ্বিতীয় তলায় আসতেই কারেন্ট চলে যায় আর আচমকা ধাক্কা দিয়ে লিফট বন্ধ হয়ে যায়।
একদম অন্ধকার,,অন্ধকারে আছন্ন হয়ে আছে,,একে তো আগের ঘটে যাওয়া ঘটনা তারমধ্যে এভাবে কারেন্ট চলে যাওয়া আর লিফট বন্ধ হয়ে যাওয়ার জন্য আরো ভয় পাচ্ছি।
মনে মনে দোয়া পড়ছি, আল্লাহ পাকের কাছে ফরিয়াদ জানাচ্ছি তাড়াতাড়ি যেন কারেন্ট চলে আসে না হলে কেউ যেনো জেনারেটরটা চালু করে দেয়,, নিশ্চুপ দাঁড়িয়ে আছি নিজের নিশ্বাসের শব্দ নিজের কানেই বিকট শব্দে শুনতে পাচ্ছি, তার সঙ্গে বুকেন ধুকপুক তো রয়েছেই হঠাৎ কেমন জানি মনে হচ্ছে আমি ছাড়াও লিফটে কেউ আছে,, বুকটা আবার কেঁপে উঠল,, পকেটে হাত দিলাম ভয়ে ভয়ে,,কারন পকেটে দিয়াশলাই ছিল আর সিগারেটের পেকেট,,মূলত শুনেছি আগুন দেখলে এসব জ্বীন পরী ভুতপ্রেত কাছে আসে না তাই সিগারেটের পেকেটটা বের করে একটা সিগারেট ঠোঁটের আগায় নিলাম,,এরপর দিয়াশলাই বের করে ফুত করে চাপ দিতেই প্রথমবার মিস ফায়ার হল,,কিন্তু ঐ একটু আলোতেই দেখতে পেলাম,,,,,,,.????
part_29
season_4
কেমন জানি মনে হচ্ছে আমি ছাড়াও লিফটে কেউ আছে,, বুকটা আবার কেঁপে উঠল,, পকেটে হাত দিলাম ভয়ে ভয়ে,,কারন পকেটে দিয়াশলাই ছিল আর সিগারেটের পেকেট,,মূলত শুনেছি আগুন দেখলে এসব জ্বীন পরী ভুতপ্রেত কাছে আসে না তাই সিগারেটের পেকেটটা বের করে একটা সিগারেট ঠোঁটের আগায় নিলাম,,এরপর দিয়াশলাই বের করে ফুত করে চাপ দিতেই প্রথমবার মিস ফায়ার হল,,কিন্তু ঐ একটু আলোতেই দেখতে পেলাম একটা বাচ্চা মেয়ে,একেবারে বাচ্চাও,না, বয়স ১২-১৩ হবে,ফ্রক পড়ে,হাতে একটা পুতুল নিয়ে দাড়িয়ে আছে,, মুখটা লাল কিন্তু কেনো তা বুঝতে পারলাম না,,এই দৃশ্য দেখামাত্র চিৎকার করতে গিয়েও পারছি না।লজ্জার কথা চিন্তা করে।
এদিকে ভয়ে গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে।
মুখ থেকে সিগারেটটা পরে গেল সঙ্গে হাতে থাকা লাইটারটাও,,এতক্ষণ যতটুকু ভরসা ছিল তাও শেষ,, কিন্তু আল্লাহ পাকের অশেষ কৃপায় তৎক্ষনাৎ কারেন্ট চলে আসে আর সঙ্গে সঙ্গে সব পরিষ্কার হয়ে যায়,, আশ্চর্য হয়ে লক্ষ করলাম লিফটে কেউ নেই আমি ছাড়া আর লিফটও চলতে শুরু করলো,, যথাস্থানে এসে লিফট বন্ধ হয়ে দরজা খুলে যায় আর আমি দৌড়ে আমার ফ্লাটের দরজা কোন ভাবে খুলে ভিতরে চলে যাই,,
এরপর আর কোন কিছু হয় নি,,যদিও প্রচুর ভয় আর এমনিতেই আগে থেকেই শারীরিক অসুস্থতার জন্য দ্রুতই ঘুমিয়ে যাই বিছানায় গা রাখার সঙ্গে সঙ্গে।
ফ্রেশ একটা ঘুমে বেলা ১২ টার দিকে ঘুম ভাঙে আর গতরাতের কথা মোটামুটি ভুলেই যাই,, ব্যাথাটাও নেই ততক্ষণে।
যদিও পরে মনে হলে গা ছমছমে উঠে তবুও নিছক দূর্ঘটনা বলে কাটিয়ে দেই, এ কথা কাউকে শেয়ার করি নাই,, এবং কি তোমাদেরকেও না।
যাইহোক আজ তিন দিন পর গত রাতে ঠিক ১১.১৭ এর দিকে বাসায় আসি।রাত ১০ টার দিকে ডিউটি শেষ আর কিছু সময় আড্ডা দিয়ে হোটেলে খাওয়া শেষ করে আসতে আসতে ১১ টা পার হয়ে যায়। বি শিফট থাকার কারনে আগেই চলে আসি।
বাসার লিফটে উঠি তবে এদিন বেশ অবাক হই।কারন আমাদের বাসায় রাত ১২ টা পর্যন্ত লিফটে চলাচলের সুবিধার জন্য লিফট ম্যান থাকে কিন্তু আজকে ১১.১৭ তেই তাকে দেখতে পাই না।
যাইহোক হয়তোবা কোন সমস্যার কারনে আগেই চলে গেছে,, লিফট চলতে শুরু করলো।
আগের মতন সেম অবস্থায় এসে মানে দ্বিতীয় তলায় আসতেই হঠাৎ ঠাশ করে একটা শব্দ হল,,বিকট শব্দ,, বুঝতে বাকি রইলো না যে লিফটের থাকা বাল্বটা ফেটে গেছে,, আর ধাম করে লিফট বন্ধ হয়ে যায়, কের কের করে নিচের দিকে আর উপরের দিকে নড়াচড়া করতে থাকে লিফট,, হঠাৎ এমন হওয়ায় আমার মাথা লিফটের ছাদের সঙ্গে আগাত লাগে,,বেশ ব্যথা অনুভব করছি,, মাথায় সজোরে আগাত লাগায় একটা হাত দিয়ে মাথায় চেপে ধরি,,কিন্তু হাত রাখার সঙ্গে সঙ্গে বুঝতে বাকি রইলো না যে মাথা ফেটে গেছে, রক্তে হাত ভিজে একাকার হয়ে গেছে।
প্রথমে তো লিফট ছিড়ে যাওয়ার ভয়ে ছিলাম কিন্তু সেই ভয়টা কাটিয়ে লিফট দাড়িয়ে যায়,, অন্ধকারে কিচ্ছু দেখতে পাচ্ছি না, তারমধ্যে ফাটা মাথা দিয়ে অনর্গল রক্ত বের হচ্ছে, এবার দুই হাতে চেপে ধরে আল্লাহ আল্লাহ করছি যাতে তাড়াতাড়ি কারেন্ট চলে আসে,, এতক্ষণ পর্যন্ত অতি ভৌতিক কোন বিষয় আমার মাথায় আসে নি,,যদিও ভয় পাচ্ছি সেইটা শুধু মাত্র অন্ধকার আর লিফট ছিড়ে যাওয়ার ভয়।
হঠাৎ করেই আচমকা আগের কাহিনী শুরু হয়ে যায়।
কেমন জানি মনে হচ্ছে আমি ছাড়াও দ্বিতীয় কোন কিছুর অস্তিত্ব আছে এই লিফটে।
তার চলাফেরার শব্দ শুনতে পাচ্ছি।
বুকটা মোচড় দিয়ে উঠলো বুকের বা পাশটা হুট করেই ব্যাথা অনুভব করছি।
ছমেছমে পরিবেশের সৃষ্টি হল মহূর্তের মধ্যে।
কেমন জানি অন্ধকারটাকে আরো গুমোট পরিস্থিতি সৃষ্টি হল, হু হু করে একটু বাতাস আমার গা গেষে গেল যা ছিল প্রচন্ড গরম বাতাস,,মুখের যে পাশটা দিয়ে পাস হল মনে হচ্ছে সেই পাশটা পুড়ে গেছে।
সঙ্গে ধুপ ধুপ আওয়াজ শুনে পাচ্ছি।
বন্ধ লিফটের মধ্যে সেই শব্দ কান ঝালাপালা করে দিচ্ছে, হার্টবিটে হাতুড়ি দিয়ে আগাত করছে।
শো শো করে বাতাসের তীব্রতা বৃদ্ধি পাচ্ছে আর সঙ্গে একটা হাসি,,বিকট সেই হাসি,না কান্না না হাসি দুইটা মিশ্রণে একটা ভয়ানক কন্ঠ।
সাথে তিব্র গন্ধ যা ভিতরের নাড়িভুড়ি সব বেরিয়ে নিয়ে আসবে,,পুলিশের চাকরি করি তাই গন্ধটা চিনতে অসুবিধা হল না,,গন্ধটা পঁচা লাশ কিংবা লাশ পোড়া গন্ধ।
গন্ধটা এতটাই তিব্র যে মরে যাবো বলে মনে হচ্ছে গন্ধের জন্য।
এদিকে ভয় আর মাথার যন্ত্রনা আরেকদিকে গন্ধ সব মিলিয়ে টের পাচ্ছি আজকে ভালো করেই শয়তান পিশাচটার ক্ষপ্পড়ে পরে গেছি,,মনে হচ্ছিল আজকেই বুঝি শেষ দিন আমার জীবনের।
মনে মনে আল্লাহকে ডাকছি আরেকটা হাত দিয়ে পকেট থেকে ফোনটা বের করলাম কিন্তু অস্বাভাবিক হলেও সত্যি যে আমার ফোনে লিফটে ওঠার আগেও যেখানে ৭৩% ছিল সেই ফোনের স্ক্রিনে আলো আসছে না মানে ফোনটা অফ,, অন করার ট্রাই করতে গিয়েও ব্যার্থ,,এদিকে গলা ফাটিয়ে ডাকছি কিন্তু কারোর সাড়াশব্দ পাচ্ছি না,, আবার আরেক হাত পকেটে দিয়ে দিয়াশলাই বের করে জ্বালাতে যাবো এমন সময় মাথায় কোন কিছুর স্পর্শ পেলাম,,কিছু একটা আমার মাথায় জিব দিয়ে চাটছে আর চুষে রক্ত খাচ্ছে যা বুঝতে পেরেই ছিটকে দূরে সরে গেলাম ফোনটা হাত থেকে পরে গেল, দিয়াশলাইটাও পরে গিয়েছিল কিন্তু ভয়ে আতংকে দিকবিদিকশুন্য হয়ে হাতাহাতি করছি ফোনটা আর দিয়াশলাইটা খোঁজার জন্য।
ফোনটা না পেলেও কিছু সময়ের মধ্যে দিয়াশলাই টা পেলাম কিন্তু তা ফায়ার করার মতন শক্তি পাচ্ছি না,,হাত পা সহ সারা শরীর কাঁপছে থরথর করে।
বুকে কোন মতো সাহস এনে জ্বালানোর চেষ্টা চালিয়ে গেলাম,,চার পাঁচবার কোন ফল পেলাম না,,এদিকে গন্ধটা আরো কাছে এগিয়ে আসছে বুঝতে বাকি রইলো না আবারো আমার মাথার দিকে আসছে,আমার মাথার ক্ষতস্থানের রক্ত পান করে তৃপ্তি পেয়েছে পিশাচটা,, বারবার খাওয়ার চেষ্টা করছে হয়তোবা আজকেই সমস্ত রক্ত চুষে খেয়ে ফেলবে,,
কতক্ষণ পর জ্বালাতে পেরেছি তা নিজেও জানি না
কিন্তু যখন জ্বালালাম তখন দেখি সেই মেয়েটা তবে আজকে ওর হাতে একটা বাচ্চা,, বাচ্চা বলতে ৪-৫ দিনের বয়সের কিংবা তারো কম বয়সের হবে আর মেয়েটার মুখে রক্ত বেয়ে বেয়ে গড়িয়ে পরছে।
আর হাতের থাকা সেই বাচ্চাটার শরীর বেয়ে গড়িয়ে পড়ছে পঁচা গলা মাংস তবে বাচ্চার পা একটা নেই, বুঝতে বাকি রইলো না এই মেয়েটাই বাচ্চাটার একটা পা খেয়ে ফেলছে।
এই দৃশ্য দেখার পর আমি আর আমার জ্ঞান ধরে রাখতে পারি নাই,,কতক্ষণ অজ্ঞান অবস্থায় ছিলাম জানি না কিন্তু যখন হুশ ফিরে পাই তখন দেখি আমি আমার ফ্লাটের দরজার সাথে হেলান দিয়ে বসে আছি যা আরো বেশি অবাক করে দেয় আমাকে।
আর তখন ভোরে আলো ফুটতে শুরু করেছে,মসজিদে আজান দিচ্ছে।
তড়িঘড়ি করে ফ্লাটের দরজা খুলে ভিতরে প্রবেশ করি কিন্তু তারাহুরো করতে গিয়ে খাটের সাথে আগাত পেয়ে আবার জ্ঞান হারিয়ে ফেলি আর যখন আবার জ্ঞান ফিরে পাই তখনই তোমাকে ফোন দিলাম।
।
লম্বা একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে কথা গুলো বললো সুমিত,,আর তা শুনে স্যার ভয়ে কাচুমাচু হয়ে খাটের সাথে লেপ্টে রয়েছে যা দেখে এত কষ্টের ব্যাপারের মধ্যেও বেশ হাসি পাচ্ছে,, যাইহোক কেনো বা কি জন্য এমনটা হল এর কোন কারন আপাতত আমার জানা নেই তাই স্বান্তনা দেওয়া ছাড়া আর কোন কিছু করার ছিল না।
কিছু টা সাহস দেওয়ার চেষ্টা করলাম আর আমার সঙ্গে করে বাহিরে নিয়ে আসলাম সুমিত কে।
কারন এভাবে একা একা রুমে থাকলো ভয়ে ধম বন্ধ হয়ে মারা যাবে,,
কিন্তু সবকিছুর মধ্যেই একটা বিষয় স্পষ্ট বুঝতে পারছি যে এটা কোন জ্বীন পরী বা ভুতপ্রেতের নিজেদের ইচ্ছের কাজ না,,কেউ পাঠিয়েছে সুমিতের ক্ষতি করার জন্য যদিও আমাদের শত্রুর অভাব নাই তবুও কোন শত্রু হতে পারে তা মাথায় খেলছে না।
।
বাহিরে এসে সুমিতকে হোটেলে নিয়ে কিছু খাইয়ে নিলাম যদিও এমন অবস্থায় কারোরই মুখ দিয়ে খাবার নামবে না।
এদিকে স্যার যে তখন থেকে হা করছে এখন পর্যন্ত সে হা বন্ধ হয় নি,,
।
আমিঃ- স্যার সাডারটা বন্ধ করেন,,না হয় মশা মাছি যাবে।
।
স্যারঃ- হোপ😑😑😑
আচ্ছা আপনারা কি সবাই সব সময় এসব নিয়েই থাকেন.??
যখনই শুনি তখনই ভুতপ্রেত হাবিজাবি,,
আচ্ছা এখন কাজের কথায় আসেন,, আপনার (আমাকে) কাগজপত্র সব রেডি করেন আজকের মধ্যেই,,বাড়ির সবার মানে ভাবির কাগজপত্র রেডি করে বাবুরটা সহ,,আর যদি চান তো অন্য কাউকে সঙ্গে করেও নিতে পারবেন সেইটা যদি আপনার সুবিধা হয় এরজন্য, যেহেতু মিশনটা খুবই ভয়ানক তাই বিশ্বাসি কাউকে নিতে পারবেন,,এমনটাই জানিয়েছেন উপর মহল থেকে।
যদি কাউকে নিন তাহলে তার কাগজপত্র আজকেই জমা দিতে হবে যাতে করে দ্রুত সব শুরু আর শেষ করে দ্রুত চলে যেতে পারেন।
।
সুমিত কিছুটা স্বাভাবিক হয়ে জিগ্যেস করলো কি সম্পর্কে কথা হচ্ছে,, পরে বাকিট আমি বুঝিয়ে বললাম।
নির্দিধায় সুমিত যেতে রাজি হয়ে গেল,, মূলত সুমিতের সাথে বর্তমানে যা ঘটছে তাতে সে আর একা থাকতে সাহস পাচ্ছে না।
এদিকে স্নেহা আর বাবুর কোন খোঁজ নেওয়া হয় নি,,
স্যার ও সুমিত এর সাথে কথোপকথন শেষে স্নেহাকে ফোন করলাম আবার,,এবার রিসিভ হল।
যতটুকু শুনলাম তাতে করে মানুষের ভির কমার চেয়ে আরো বেড়ে গেছে কয়েকগুণ,, এখন পর্যন্ত বাবু খেতেও পারে নি,,
ধুররর এসব আর ভাল্লাগছে না,মনটায় চাচ্ছে একটা বন্ধুক নিয়ে গিয়ে সব পাগল ছাগলের জাতদের গুলি করে মেরে ফেলি,,
যাইহোক স্নেহাকে সব জানালাম,,যাতে মানসিক ভাবে আগে থেকেই প্রস্তুতি নিয়ে থাকতে পারে,,রাতেই বাসা থেকে বের হয়ে আসবো যাতে লোকজন দেখতে না পায় আর এই কয়দিন সুমিতের বাসায় থাকবো,,
দিন শেষে রাত নেমে আসলো,,আমিও বাসায় চলে গেলাম আর সুমিত ও ডিউটিরত আছে।
প্লান মাফিক রাত ১২ টার দিকে আমার বাসা থেকে বের হয়ে সব কাগজেপত্র আর প্রয়োজনীয় কাপড়চোপড় নিয়ে সুমিতের বাসায় এসে উঠলাম,, চাবি আগে থেকেই সঙ্গে ছিল তাছাড়া সুমিত ও নিচর দাড়িয়ে অপেক্ষা করছে,,একা একা বাসায় যেতে সাহস পাচ্ছে না।
।
বাসায় উঠে সুমিতের বর্তমান সমস্যার কারন জানতে জাদুর আংটিটা আঙুল থেকে খুললাম।
কারন বাসায় ঢুকার সময় কেমন জানি অনুভূতি হচ্ছিল,কেউ একজন কোন একটা এনটিটি ভা পিশাচ টাইপের জ্বীন এখানে তার উপস্থিতি টের পাচ্ছি।
রুমে গিয়ে স্নেহা আর বাবুকে রেখে সুমিতের কাছে বসে আংটিটা মাথায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে,,,,..???
part_30
season_4
বাসায় উঠে সুমিতের বর্তমান সমস্যার কারন জানতে জাদুর আংটিটা আঙুল থেকে খুললাম।
কারন বাসায় ঢুকার সময় কেমন জানি অনুভূতি হচ্ছিল,কেউ একজন কোন একটা এনটিটি ভা পিশাচ টাইপের জ্বীন এখানে তার উপস্থিতি টের পাচ্ছি।
রুমে গিয়ে স্নেহা আর বাবুকে রেখে সুমিতের কাছে বসে আংটিটা মাথায় দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আগের মতন সব উলোটপালোট হতে শুরু করলো কিছু সময়ের মধ্যে স্বাভাবিক হয়ে আংটির রক্ষি চার জ্বীন বা দরবেশ টাইপের লোক এসে হাজির,,
সালাম আদানপ্রদান শেষে,,,
দরবেশঃ- হুকুম করুন জনাব কিভাবে আপনাকে সাহায্য করতে পারি।
।
আমিঃ-সুমিতের অবস্থা আপনারা জানেন হয়তোবা।
হঠাৎই করে এমন সমস্যার কারনটা কি বলতে পারবেন.???
।
দরবেশঃ-সমস্যাটা খুবই জটিল এবং ভয়ংকর। কোন জ্বীন ভুতপ্রেত ইচ্ছে করে করছে না এ কাজ।
এই নিকৃষ্টতর কাজ করানোর জন্য এদেরকে নিয়ে আসা হয়েছে, মোটা চারজন কাজ করছে সুমিতের ক্ষতি করার জন্য।
আর আমরা যতদূর জানি সব গুলা আফ্রিকা থেকে আনা হইছে বা কেউ সেখানে বসে চালান করে দিয়েছে, এই জ্বীন গুলো ভাড়ায় খাটে বা এদেরকে ঠিকাদার বলতে পারেন।
এরা অর্থের বিনিময়ে কাজ করে,,খুবই কঠিন কালো যাদুর সাহায্যে এদেরকে বশে এনে এদেরকে তৃপ্ত করে তারপর এসব নিকৃষ্টতর কাজ করানো হয়।
কেউ নিজের কিংবা অন্যের সার্থে বা কোন শত্রুতার সূত্রপাত ধরে সুমিতের ক্ষতি করার জন্য উঠে পরে লেগেছে আর এভাবে আক্রমণ করে আস্তে আস্তে মেরে ফেলার চিন্তা ভাবনা করছে।
।
আমিঃ- বিষয়টা ঠিক বুঝতে পারছি না,, আফ্রিকা থেকে মানে..?
আফ্রিকা থেকে কে এসব করতে যাবে,,তাছাড়া এসব করতে মানে ব্লাকমেজিক করতে চাইলে তো বাংলাদেশ থেকেই করতে পারতো,,বিষয়টা একটু ক্লিয়ার করবেন,,
।
দরবেশঃ- হুমম করতে পারতো কিন্তু আফ্রিকা হচ্ছে কালোজাদুর আতুড়ঘর,, তাহলে শুনেন,,,,
ব্লাক ম্যাজিক বা কালোজাদু বা ভুত যাই বলি না কেন এই জাদু চর্চার উৎপত্তি হাইতিতে। তবে আফ্রিকায় এর চর্চা ব্যাপক। ব্রাজিল, জ্যামাইকায়ও কম ভুডু চর্চা হয় না। তবে বিভিন্ন দেশে বিভিন্ন নাম। যেমন, হাইতিতে বলা হয় ভুডু, দক্ষিন আমেরিকার দেশ ব্রাজিলে ক্যানডোমবল, জ্যামাইকায় ওবিয়াহ ইত্যাদি। পশ্চিম অফ্রিকার মানুষ সবচেয়ে বেশি বিশ্বাস করে ভুডুতে। সেখানকার কমপক্ষে পঁচিশ লাখ মানুষ এ বিদ্যার অনুরাগী। এ চর্চা সবচেয়ে বেশি হয় আফ্রিকার ঘানায়। ঘানার ককুজানের অধিবাসীরা এ বিদ্যাটির সাংঘাতিক অনুরাগী। এরা অসুখ-বিসুখে সরকারি হাসপাতালের ডাক্তারদের কাছে যাওয়ার চেয়ে ভুডু চিকিৎসকদের ওপর অনেক বেশি ভরসা করে।
তাই যে করছে সে আফ্রিকা থেকেই করেছে কারন তারা এসব বিষয়ে পারদর্শী বেশি।
।
আমিঃ- হুমম ডুডু সম্পর্কে আমিও কিছুটা শুনেছিলাম কিন্তু,,, এর সম্পর্কে বিস্তারিত জানি না।
তবে এতটুকু শুনেছি খুবই মারাত্মক ভয়ংকর।
।
দরবেশঃ-এক ধরনের বিশেষ ব্ল্যাক ম্যাজিক হচ্ছে ভুডু। ভুডুবিদ্যার সাহায্যে নাকি কবরের লাশ জ্যান্ত করে তাকে গোলামের মতো খাটানো যায়। অন্যদিকে শামানের কাজও মৃত মানুষের আত্মা নিয়ে। তবে ভুডুর সঙ্গে শামানদের পার্থক্য— এরা মন্দ আত্মার বিরুদ্ধে লড়াই করে। মন্দ আত্মাকে কাজে লাগায়।
দুষ্ট ব্যক্তি একটি পুতুলের গায়ে সুচ ফুটিয়ে আরেক জায়গায় এক ব্যক্তিকে হত্যা করছে কিংবা অন্য কোনো উপায়ে ক্ষতি করার চেষ্টা করছে। বাংলায় একে ফুঁক দেওয়া, কবজ করা অথবা বাণ মারা বলে। এ ধরনের ঘটনা যারা ঘটায় তাদের ওঝা বলে। আর এ প্রক্রিয়াটিই বিশ্বব্যাপী ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালো জাদু নামে পরিচিত। খ্রিস্টধর্ম প্রবর্তনেরও আগের কথা। বহুকাল আগে পাশ্চাত্যে বিভিন্ন গোত্রের মধ্যে নির্দিষ্ট কোনো ধর্মের প্রচলন ছিল না। তবে তাদের মধ্যে অদ্ভুত কিছু বিশ্বাস ও কর্মকাণ্ডের চর্চা ছিল। এরা এক একটি গোত্র বিভিন্ন কাল্পনিক ভূত-প্রেত বা অশুভ আত্মার আরাধনা করত। যা আফ্রিকান ব্ল্যাক ম্যাজিক বা কালো জাদু নামে পরিচিত। এমনকি এখনো এ বিদ্যার গোপন অনুসারীরা তাদের এ বিদ্যা দিয়ে মানুষের ক্ষতি করে আসছে। এ বিদ্যায় পারদর্শীদের ডাকি বা ওঝা বলে আর আফ্রিকান ভাষায় এদের বলে কিনডকি।
।
আমিঃ- ওরে আল্লাহ,,,,
বলেন কি এসব,,তাহলে সুমিতকেও কি এসব করা হয়েছে.??
।
দরবেশঃ- হুমমম সুমিতের উপরেও একই কাজ করা হয়েছে তাও মারাত্মক ভাবে করা হয়েছে।
।
আমিঃ- তাহলে বলুন কেনো বা কে কি উদ্দেশ্যে এইরকম কাজ করেছে.??
।
দরবেশঃ- ঐ যে আগেই বললাম এখনো জানি না বা বুঝতে পারছি না জানতেও পারছি না,,এ কে তো দূরত্ব অনেক বেশি আর তার মধ্যে নিকৃষ্টতর কাজ,,অপবিত্র কাজ তাই চাইলেও গিয়ে জানতে পারছি না,,তবে আমাদের সকলের সতর্ক থাকতে হবে।
।
আমিঃ- আমার মনে হচ্ছে আমাদের সবাইকে ফাঁসানোর জন্য এটা করা হচ্ছে আর সব মিলিয়ে আমাদের ওদের কাছে নেওয়ার জন্য তালবাহানা চলছে।
ওকে সমস্যা নেই আমিও প্রস্তুত আছি,,এর রফাদফা করেই ছাড়বো,,
এবারের মিশন ও ভৌতিক মিশন হিসেবেই যাবো আফ্রিকার ঘানা বা ব্রাজিলে,,
(এই দুই দেশের কথা এরজন্য বললাম যেহেতু দরবেশ জ্বীন এখনো কোন দেশ উল্লেখ করে নাই নির্দিষ্ট ভাবে কিন্তু দুইটা দেশের কথা বলেছে সো দুইটার মধ্যেই একটা হবে আর তা বুঝা যাবে আগামীকাল যখন মিশনের সব জানাবে বিস্তারিত ভাবে)
।
আমার কথা গুলো শুনে দরবেশদের মধ্যে একজনও কোন কিছু বললো না তবে তাদের দেখে কেমন জানি চিন্তিত মনে হচ্ছে,, হয়তোবা এরাও একটু ভয়ে আছে যদি কোন সমস্যার মধ্যে পরতে হয় তা ভেবে।
যাইহোক এতকিছু ভেবে লাভ নেই আপাতত উনাদের বিদায় দিলাম।
সুমিত সব শুনে বেশ চিন্তার মধ্যে পরে গেছে,, কিন্তু সাহস দিয়ে আস্বস্ত করলাম আমি বেচে থাকতে কোন ক্ষতি হতে দিবো না ইনশাআল্লাহ।
তাছাড়া এটা শুধু সুমিতের সমস্যা না,,এটা আমাদের সকলের সমস্যা সো এর বিহিত করতেই হবে,,এর মূল হোতাকে বের করতেই হবে।
।
রাতটা কেটে গেল,, সকালে অনেক টেনশন আর অধীর আগ্রহ নিয়ে অফিসে গেলাম আমার, স্নেহার, সুমিতের আর বাবুর কাগজপত্র নিয়ে।
এদিকে স্নেহা রাত থেকেই অনেক প্রশ্ন করে যাচ্ছে কিন্তু কোন কিছু জানাই নি,,সুমিতের কথা জানালে ভয় পাবে আর অহেতুক টেনশন করবে।
যাইহোক অফিসে গিয়ে জানতে পারলাম আমাকে ঘানায় পাঠানো হচ্ছে এক বছরের জন্য।
সেখানে থেকে অনেক নেশা জাত দ্রব্য অবৈধ পথে আমাদের দেশে আসে আর সবচেয়ে বড় যে গোপন মিশনে পাঠানো হচ্ছে তা নাকি পরবর্তীতে জানানো হবে,,বুঝতে পারছি এখানেও ভৌতিক বিষয় লুকিয়ে আছে,, উনারা কোন ভৌতিক বিষয় নিয়েই পাঠাচ্ছেন আমাকে,,।
আমার মন বলছে রাজনৈতিক নেতাদের বিরুদ্ধে কেউ জাদুবিদ্যা করেছে কিংবা কোন জ্বীন পরীর পাল্লায় পরেছে কোন নেতা বা হতে পারে ডিফেন্সের কোন বড় অফিসার।
কারন যখনই আমাকে আরো কিছু লোক সঙ্গে নিতে বলেছে বা নিতে পারবো তখনই বুঝা শেষ।
কারন আমার ফোর্সের সবাই জানে যে আমি এ বিষয়ে পারদর্ষী তাছাড়া সুমিত সাগর সব সময় আমার সাথে থেকেছে আর তাই ঘুরিয়ে ফিরিয়ে ওদেরকেই ইংগিত করছে কিন্তু ডিপার্টমেন্ট সুমিত সাগর দুইজনকে ছাড়বে না তাই একজনের কথা বলেছেন।
যাইহোক সব কাজ কমপ্লিট করে তিনদিনের মাথায় ঘানায় চলে আসলাম সুমিত সহ স্নেহা আমি আর বাবু,,,
এয়ারপোর্টে আমাদের শুভেচ্ছা জানাতে আর রিসিভ করতে সেদেশে থাকা রাষ্ট্রদূতের নিরাপত্তায় থাকা বিশেষ কিছু সদস্যকে পাঠানো হয়েছে,, বুঝতে পারছি আমি এখানে আসাটা অনেক দিকেই ছড়িয়ে গেছে আর এখানে প্রতিটি কদম আমাকে বুঝে শুনে ফেলতে হবে।
এদিকে বাবু প্রথম থেকেই যেন কেমন জানি অদ্ভুত আচরণ করছে যখন থেকে শুনেছে আমরা ঘানা যাচ্ছি তখন থেকেই।
তখন থেকেই কেমন জানি অস্থিরতা কাজ করছে বাবুর মধ্যে।
কোনদিন ওর থেকে জিগ্যেস করে কোন উত্তর পাই নি তাই বৃথা চেষ্টা করি নাই এবার।
রাতে। বিকালের ফ্লাইটে ঢাকা থেকে ঘানা আর সেখান থেকে হোটেল পর্যন্ত পৌছাঁতে রাত ১১ টা বেজে গেছে।
হোটেলে রেখে নিরাপত্তা কর্মীরা চলে গেলেন আর তাদের সাথে কন্টাক্ট করার সকল ব্যবস্থা বুঝিয়ে গেলেন।
সুমিতের জন্য একটা রুম আর আমাদের তিনজনের জন্য একটা রুম বরাদ্দ রাখা হয়েছে।
হোটেলটা কেমন জানি অদ্ভুৎ লাগছে,,কেমন জানি বিষয়টা ঠিক বুঝানোর মতন না,,আমার মোটেও ভাল্লাগছে না।
কেমন জানি মৃত মৃত মনে হয়,, মনে হচ্ছে কোন প্রাণ নেই হোটেলে,, সব কেমন জানি নিরব আর প্রাণহীন।
হোটেলের কর্মীগুলোও অদ্ভুৎ,, কেমন নজরে তাকায় মনে হচ্ছে অনেক দিন পর আমাদের অপেক্ষায় থেকে আজ পেয়েছে,,আমাদেন জন্য তাদের দীর্ঘ প্রতিক্ষা আজ শেষ হল।
যাইহোক পরিস্থিতি থাকতে থাকতে বুঝা যাবে।
কারন নতুন দেশ হয়তোবা এদের আচরণ ই এমন আর আসার আগেই বিভিন্ন কথা শুনে বা মনে করে এসেছি তাই হতে পারে এসব থেকেই উল্টো পাল্টা চিন্তা মাথায় আসছে।
যাইহোক রুমে ঢুকে শাওয়ার নিতে ওয়াশরুমে গেলাম।
মনের সুখে শাওয়ার নিচ্ছি,,রুমে সুমিত, স্নেহা আর বাবু বসে গল্প করছে,,হঠাৎ রুম থেকে আত্নচিৎকার
ভেসে আসলো,,দৌড়ে রুমের বাহিরে চলে আসলাম।
কিন্তু এসে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম কারন সব কিছু স্বাভাবিক,, কোন সমস্যা নেই তাহলে এমন চিৎকার কে করলো,,ওরা জিগ্যেস করছে হুটহাট এভাবে বেরিয়ে আসলাম কেনো.??
কোন মতো মিথ্যা বলে তখনকার মতন কাটিয়ে দিয়ে আবার শাওয়ার নিতে ওয়াশরুমে প্রবেশ করলাম আর ঢুকেই দেখি,,,,,,,.???
part_31
season_4
মনের সুখে শাওয়ার নিচ্ছি,,রুমে সুমিত, স্নেহা আর বাবু বসে গল্প করছে,,হঠাৎ রুম থেকে আত্নচিৎকার
ভেসে আসলো,,দৌড়ে রুমের বাহিরে চলে আসলাম।
কিন্তু এসে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইলাম কারন সব কিছু স্বাভাবিক,, কোন সমস্যা নেই তাহলে এমন চিৎকার কে করলো,,ওরা জিগ্যেস করছে হুটহাট এভাবে বেরিয়ে আসলাম কেনো.??
কোন মতো মিথ্যা বলে তখনকার মতন কাটিয়ে দিয়ে আবার শাওয়ার নিতে ওয়াশরুমে প্রবেশ করলাম আর ঢুকেই দেখি বাথটাবে কেউ শুয়ে আছে যেমন ভাবে গোসল করা হয় ঠিক সেম ভাবে তবে মাথার দিকে একটা তোয়ালে রাখা,, সেই তোয়ালে দিয়ে মুখটা ঢাকা যার কারনে মুখটা দেখা যাচ্ছে না। তবে পোশাক আশাকে মনে হচ্ছে মেয়ে মানুষ হবে।
আমি ঘাবড়ে গেলাম,,,সঙ্গে ভয়।
এমন পরিস্থিতির জন্য আমি মোটেও প্রস্তুত ছিলাম না,,,এটা কি মানুষ নাকি অন্য কিছু বুঝতে পারছি না।
মানুষ হওয়ার তো কথা নয়,,কারন আমি তো মাত্র বেরিয়ে গেলাম আবার আসলাম,,কেউ ঢুকতে চাইলে আমার সামনে দিয়ে আসতে হবে তাছাড়া এত হাই সিকিউরিটির মধ্যে কোন মানুষের পক্ষে সম্ভব না অনুমতি ছাড়া অন্য কারোর রুমে প্রবেশ করা,,তবুও একটু বিষয়টা দেখতে হবে,,হতেও তো পারে যে আগে থেকেই ছিল মেয়েটা হোটেলের এই রুমে আর আমাকে ভয় দেখাতে কিংবা অন্য কোন কুমতলব নিয়ে এখানে এসেছে যদিও তা সম্ভব না তবুও কিন্তু বলে একটা কথা থাকে,,
হাত দিয়ে টাচ করবো কি করবো না ভাবতে ভাবতেই চোখ ছানাবড়া হয়ে গেল,, পানি আস্তে আস্তে রং পাল্টাতে শুরু করেছে।
পানি লাল রং হতে শুরু করছে,, যতটুকু বুঝতে পারছি তাতে রক্তের মতন লাগছে,,সমস্ত পানিটাই রক্ত হয়ে গেল মহূর্তের মধ্যে।
ভয় কেমন জানি চেপে বসেছে।
তবুও আস্তে আস্তে এগিয়ে যাচ্ছি উদ্দেশ্য মুখের কাপড় সড়িয়ে ফেলা,,যদিও জানি হয়তোবা আমার জন্য এমন কি অপেক্ষা করছে যা আমি মোটেও কল্পনা করবো না,,কিন্তু তা যে এত ভয়ানক হবে তা সত্যি কল্পনার বাহিরে ছিল,, গুটি গুটি পায়ে এগিয়ে গিয়ে মুখের উপর থাকা কাপড়টা সড়াতেই মাথা কাটা একটা গলা দেখতে পেলাম আর যেখান থেকে অনবরত রক্ত ঝরে যাচ্ছে আর সেই রক্তে মিশে লাল হয়ে গেছে বাথটাবের পানি,টবটব করে ফুটন্ত রক্ত বুতবুত ছড়াচ্ছে,, মন্ডু কাটা গলাটা দেখেই ছিটকে কয়েক হাত দূরে গিয়ে পরলাম।
উঠে বাহিরে চলে আসার চিন্তা থাকলেও উঠতে পারছি না,,আমার শক্তি কেমন জানি হ্রাস পেয়েছে বারবার ফ্লোর থেকে উঠতে গিয়েও পিচ্চিল টাইলসে পা ফসকে যাচ্ছে,, গলা দিয়ে কোন শব্দ বের হচ্ছে না,,চোখের সামনেই গলাকাটা সেই দেহটা বাথটাব থেকে উঠে আমার দিকে এগিয়ে আসছে আর তার যে হাতটা বাথটাবের ঐপাশে ছিল সেই হাতের মধ্যে কাটা মাথাটা নিয়ে আমাকে দেখাতে দেখাতে এগিয়ে আসছে,মাথা কাটা সেই মুখে শয়তান মার্কা হাসি।
বিৎগুটে সেই হাসি বিশ্ব জয়ের হাসি,,আজকের এই দিনটার জন্যেই বুঝি অপেক্ষায় ছিল।
বারবার সূরা কেরাত উচ্চারণ করতে গিয়েও আটকে যাচ্ছি।
কোন কিছু মনে আসছে না যাও মনে আসছে তাও ভুলে যাচ্ছি।
হাতের আংটিটাও আজ কোন কাজ করছে না।
এতদিন তো এনটিটি দেখলে বা আশেপাশে থাকলে সিগনাল দিত কিন্তু আজ কোন প্রকার সিগনাল দেয় নি।
কেমন জানি মনে হচ্ছে আজকের দিনটাই শেষ, যদি স্নেহা বা ওদের ডাকতে পারতাম তাহলে হয়তোবা কোন উপকার করলে করতেও পারতো কিন্তু আমার কোন প্রকার শক্তি নেই,সব শক্তি হারিয়ে ফেলেছি,, শরীরের সব শক্তি একত্র করে চিৎকার করছি কিন্তু কোন শব্দ বের হচ্ছে না গলা দিয়ে,, গলা শুকিয়ে কাঠ হয়ে গেছে,, এক ফুটা পানির জন্য ছটফট করছি কিন্তু চোখের সামনেই পানির টেপ থাকতেও পানি খেতে পারছি না।
আস্তে আস্তে শরীর নিস্তেজ হয়ে সব ছেড়ে দিলাম,,জানি আর কোন আশা নেই হঠাৎ করেই আচমকা এনটিটা কয়েক হাত দূরে ছিটকে পড়লো।
কাটা মাথা আর শরীর দুইটা দুই দিকে পরে গেছে আর সেই শরীর রেগেমেগে আগুন হয়ে দাড়িয়ে গেল আর কাটা মাথাটা উড়ে উড়ে জায়গা মতন লেগে পূর্নাঙ্গ মানুষের রূপে পরিনত হল।
দুই হাত ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে এক হাত আমার দিকে তাক করতেই আগুনের মতন কিছু একটা বেরিয়ে আসলো।
আর সেই আগুন আমার কাছে আসার আগেই আবার ছিটকে গিয়ে ফিরে গিয়ে সেই এনটিটির শরীরেই লাগলো,,আবার দেয়ালের সাথে গিয়ে ছিটকে পড়লো।
আরো রাগে গজগজ করছে এনটিটিটা,,কিন্তু কে বার কার জন্য এমন হচ্ছে,, আমার আংটির শক্তির কারনে নাকি অন্য কোন কারনে..?
আমি তো কাউকে দেখতে পাচ্ছি না।
এবার এনটিটিটা ফোস ফোঁস করতে করতে সাপের রূপ ধারন করলো,, এনাগন্ডার মতন বড় আকৃতির,, মুখ দিয়ে আগুনের গোলা বের করতে করতে এগিয়ে আসছে আমার দিকে এমন সময় একটা হাত সেই এনাগন্ডার মাথা চেপে ধরলো,, একদম গলায়,,এবার না এগিয়ে আসতে পারছে আর না আগুন বের করতে পারছে।
আস্তে আস্তে নিস্তেজ হয়ে যাচ্ছে সেই পিশাচটার শরীর।
হাতটার দিকে তাকিয়ে দেখি রুমের ভিতর থেকে দেয়াল বেধ করে এসেছে।
কার হাত হতে পারে এটা.??
নিজের ভিতর কেমন জানি শক্তি অনুভব করছি,, এনটিটির অবস্থা না দেখে আমার কৌতূহল মিটাতে হাতটার উৎস সন্ধানে দরজা খুলে তড়িঘড়ি করে রুমের দিকে গেলাম,,আর গিয়ে দেখি সুমিত আর স্নেহা গল্প করছে আর ওদের এক পাশ থেকে বাবুর হাত লম্বা হয়ে একদম দেয়াল বেধ করে সোজা বাথরুমের ভিতরে চলে গেছে।
আর বাবুর চোখ দিয়ে যেনো আগুন ঝড়ছে,,
এতটা রাগি চেহারা আর এমন আগুন ঝরা চোখ আগে কখনো দেখি নি।
আমি বাবুর কাছে এসে জিগ্যেস করছি কে এই পিশাচ কিন্তু বাবুর মধ্যে কোন ভ্রুক্ষেপ নেই,,
আমার কথা শুনে এতক্ষণে সবার দৃষ্টি ফিরলো মানে,, সুমিত আর স্নেহার,,
ওরা দুইজন বাবুর দিকে তাকিয়ে ছিটকে পড়লো সোফা হতে একদম নিচে,,এতটা ভয়ানক চেহারা দেখে।
ওদের মুখের ভাষা বন্ধ হয়ে গেছে, কারোর কোন কথা নেই,,এতক্ষণে একটা শব্দ আসলো বাথরুম থেকে আর বুঝা শেষ যে এনটিটিটার মৃত্যু ঘটেছে,, দৌড়ে আবার চলে গেলাম বাথরুমে, যা ভেবেছিলাম তাই হয়েছে,, এনটিটির নিথর শরীর পরে আছে বাথরুমে।
আমার পিছনে পিছনে স্নেহা আর সুমিতও আসলো অবস্থা দেখার জন্য বাথরুমে,, সবার চোখের সামনেই এনটিটির শরীরটা হাওয়ায় মিলিয়ে গেল আর একটা কাকে পরিনত হল।
ওরা আমার দিকে একবার আরেকবার বাবুর দিকে তাকাচ্ছে, ওরা কনফিউজড হয়ে গেছে।
বলা যায় নিথর হয়ে গেছে, নিস্তব্ধ হয়ে গেছে।
কোন কথা বলতে পারছে না,,আমারো সেম অবস্থা হলেও কিছুটা জ্ঞান আছে আর আস্তে আস্তে স্বাভাবিক হতে চেষ্টা করছি।
পুরোপুরি স্বাভাবিক হতে মিনিট দুই লাগলো,,জানি বাবুকে এখন এসব জিগ্যেস করে কোন উত্তর পাওয়া যাবে না আর স্নেহা ও সুমিতের অবস্থাও সহজে পরিবর্তন হবে না,,যা শকড খাইছে তাতে মিনিট ৮-১০ লাগবে।
আমিও কিছু বললাম না,,থাক কিছু সময় এরকম।
আমি তড়িঘড়ি করে সব গুছিয়ে নিলাম।
মানে গোসল ও কাপড় চেইন্জ করে নিলাম।
তারপর ওদের চোখে মুখে পানি ছিটিয়ে স্বাভাবিক করলাম।
আর এদিকে বাবু নিশ্চুপ বসে আছে,, এমন একটা ভাব যেনো কিছুই হয় নি,,আমি বুঝি না ওর মধ্যে কি এমন আছে যে এত বড় বড় ঘটনা ঘটার পরেও স্বাভাবিক থাকতে পারে.??
দুইজনেই থতমত খেয়ে আছে,,
আমিঃ-বাবু,,,ঐ বাবু,,ঐ স্পর্শ কথা শুনছিস না.?
।
বাবুঃ- হুমমম পাপ্পা বল(কেমন জানি চিন্তিত ভাব নিয়ে)
।
আমিঃ- ঐটা কে ছিল.?
।
বাবুঃ- কোনটা...?
।
আমিঃ- সব কিছুতে ফাইজলামি করবি না বলে দিলাম😡😡
।
বাবুঃ-আমি কি করে জানবো কে ছিল, হবে হয়তোবা তোমার কোন শত্রু,,,
।
আমিঃ- জানি তোকে জিগ্যেস করে কোন লাভ নেই,, তুই কি কোন দিন আমার কোন কথা শুনবি না..?
।
বাবুঃ- বাহহহহ রে তোমার কোন কথা শুনলাম না।
সব তো কানে আসছে,,হিহিহিহি
।
আমিঃ- ধুরররন ছাই,,কাকে কি বলি,,
আচ্ছা আমার কাজ আমাকেই করতে হবে।
।
(স্নেহা আর সুমিত নিশ্চুপ)
এরপর আংটিটা খুলে মাথা দেওয়ার চেষ্টা করলাম কিন্তু কোন কাজ করছেনা,,অনেক্ক্ষণ চেষ্টা করে রাগে ঢিল মেরে ফেলে দিলাম,,
যদি কোন উপকারেই না আসে তাহলে এই আংটি রেখে কি লাভ..??
স্নেহা আর সুমিত অবাক,,আসলে ওদের এখনো ঘোর কাটে নি,,
।
স্পর্শ বাবুঃ- পাপ্পা আংটির উপর রাগ দেখিয়ে কোন লাভ নেই।
আংটির কোন দোষ নেই,, আংটিতে থাকা তোমার আংটির রক্ষাকারী এই রুমে আসতে পারছে না।
ওয়েট,,,,,
।
এটা বলেই সবার চোখের সামনেই অদৃশ্য হয়ে গেল।
কিছুক্ষণ পর আবার ফিরে আসলো হাতে দুইটা বড় বড় তাবিজ নিয়ে যা আগে কখন দেখি নাই।
সঙ্গে একটা পুতুল আর পুতুলের প্রতিটি অঙ্গে সুচ ঢাবানো যা দেখে শরীর আঁতকে উঠল
এরপর বাবু বলতে শুরু করলো,,,
।
বাবুঃ-পাপ্পা,, তোমার কাছে থাকা আংটির দরবেশ গুলো এই তাবিজের জন্য এখানে আসতে পারছে না।
এখানকার তান্ত্রিক গুলো এতটাই খারাপ আর বাজে রকমের বিদ্যায় পারদর্শী যে সব উলোটপালোট করে দেয়।
শয়তানের পুঁজারীরা এমন ভাবে কুফরি কাজ করে যে কোন পবিত্র জ্বীন দ্বারের কাছেও আসতে পারে না।
এই তাবিজ দুইটা পুরিয়ে ফেলো ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
এই বলেই,,,,,,,,,,, ????
part_32
season_4
বাবুঃ-পাপ্পা,, তোমার কাছে থাকা আংটির দরবেশ গুলো এই তাবিজের জন্য এখানে আসতে পারছে না।
এখানকার তান্ত্রিক গুলো এতটাই খারাপ আর বাজে রকমের বিদ্যায় পারদর্শী যে সব উলোটপালোট করে দেয়।
শয়তানের পুঁজারীরা এমন ভাবে কুফরি কাজ করে যে কোন পবিত্র জ্বীন দ্বারের কাছেও আসতে পারে না।
এই তাবিজ দুইটা পুরিয়ে ফেলো ইনশাআল্লাহ সব ঠিক হয়ে যাবে।
।
এই বলেই দিয়াশলাই বের করে দিল আমার হাতে আর আমি চুপচাপ কিছু না বুঝেই তড়িঘড়ি করে তাবিজটা পুড়িয়ে দিলাম।
এবার পালা সেই ভুডু পুতুলের যেটার মধ্যে ব্লাকমেজিক করা হয়েছে আমাদের সকলের জন্য।
কিন্তু এর কি করবো বুঝতে পারছি না,, এটা এমন একটা পুতুল বা এমন একটা পন্থা যাতে পুতুল পুড়ালেও সমস্যা হবে না পুড়াইলেও সমস্যা হবে।
এটা ঠিক বোমার মতন,,শুধু মাত্র বোমা স্পেশালিষ্ট ছাড়া কেউ কানেক্ট ডিসকানেক্ট করতে পারে না।
ঠিক এটাও তেমন,,শুধু মাত্র যে কাজটা করেছে তার মাধ্যমেই এর প্রতিকার বের করতে হবে।
পুতুলটা হাতে নিয়ে ঘুরিয়ে ফিরিয়ে দেখছি,,আগামাথা কিচ্ছু বুঝতে পারছি না, তবে ভয়ংকর একটা পুতুল, দেখলেই গা ছমছমে উঠে।
যাইহোক আপাতত রেস্ট নিতে হবে তার আগে আংটিটা চেক করতে হবে জ্বীন বা দরবেশ চারটা আসতে পারে নাকি।
রাতের খাবার দিয়ে গেল হোটেলের স্টাফরা।
রুমেই খাওয়া শেষ করে রাত ২ টার দিকে আংটিটা মাথায় দেওয়ার সাথে সাথে দরবেশ চারটা চলে আসলো,,,এসে সালাম আদান-প্রদান শেষে,,
আমিঃ- আমি এতটা বিপদের মধ্যে থাকার পরেও আপনার আসলেন না কেনো.??
।
দরবেশঃ- আমাদের আসার মতন অবস্থা ছিল না।
অনেক চেষ্টা করেও আসতে পারি নাই,,যে তান্ত্রিক কাজটা করেছে সে অতি চালাক ও চতুর।
সে বুঝে শুনে পদক্ষেপ নিয়েই কাজটা করেছে।
পুরো বাড়িতে অপবিত্র তাবিজের রেখা একে রেখেছিল যার জন্য আমরা চাইলেও আসতে পারি নাই।
তবে এখন ঠিক আছে,,
এখন বিষয়টা হচ্ছে,, আপনি তাবিজ গুলো পুড়িয়ে ফেলে কাজ ভালো করেছেন কিন্তু সমস্যাটা হচ্ছে এই পুতুল নিয়ে,, এই পুতুল আমি বা আপনি বা অন্য কারোর কোন কিছু করাটা ঠিক হবে না।
তাছাড়া যেখানে আপনার সন্তান স্পর্শ মহারাজাও কোন পদক্ষেপ নেন নাই সেখানে আমি আপনি অতি নগন্য তবে হে আমি বা আমরা একটা বুদ্ধি দিতে পারি আর সেইটা করলেই উত্তম হবে।
।
আমিঃ- কি করতে হবে.??
।
দরবেশঃ- আমরা একটা কাজ করতে পারি আর সেইটা হচ্ছে আমরাও উল্টো যে এই ব্লাকমেজিক করেছে তার নামেও আমরা ব্লাকমেজিক করবো কিংবা তাকে ফাঁদে ফেলবো যাতে সে নিজে থেকেই এই ভুডু পুতুলটা নষ্ট করে দেয়।
আর এর জন্য যা করার সব আমরা করবো,,,
।
এই বলেই কি করলো ঠিক বুঝলাম না,,সেম আরেকটা পুতুল আসলো যা দেখতে একই রকম।
আর সেই পুতুলের সারা শরীরে সূচ লাগানো,,
।
দরবেশঃ- এবার ভিক্টিম নিজে থেকেই কাছে আসবে,,আর আপনার কিংবা আপনাদের কারোর যাতে কোন ক্ষতি না হয় সে জন্য যা ব্যবস্থা নেওয়ার দরকার সব আমরা নিবো ইনশাআল্লাহ।
তবে আমার মতে আগের যে অমীমাংসিত কাজটা শেষ করতে হবে।
।
আমিঃ- সব ই তো বুঝলাম কিন্তু অমীমাংসিত কাজটা কোনটা.??
।
দরবেশঃ- আপনার মৃত্যুপূরীতে যাওয়াটাই হচ্ছে অমীমাংসিত কাজ।
সেইটা করলেই বাকী সব সমস্যার সমাধান হবে।
হতেও তো পারে তাদের পক্ষ থেকেও আক্রমণ করছে কেউ,,আপনাদের ক্ষতি করে স্পর্শ মহারাজকে আপনাদের থেকে কেরে নিবে।
।
আমিঃ- হুমমম বুঝতে পারছি সব কিন্তু কেমন জানি ভয় ভয় লাগছে।
।
দরবেশঃ- ভয়ের কিচ্ছু নেই,, সাহসটাই মেইন।
যদি সাহস থাকে তাহলে সব কাজ ই সহজ।
জেনে রাখবেন মুসলমানদের সাহসটাই সবচেয়ে বড় অস্ত্র। সাহস আর আল্লাহর উপর ভরসা না রাখলে আজ আমরা এই সুন্দর ইসলাম পেতাম না।
যাইহোক এবার আপাতত আপনার কাজ হচ্ছে সবার আগে সেখানে ঘুরে আসা।
কারন আপনান মধ্যে এখনো প্রচুর ভয় কাজ করে তাছাড়া আপনি এখনো ঘাবড়ে যান অল্পতেই তাই আগে আপনার সাহস আর শক্তি বৃদ্ধি করতে হবে যদিও এখানে রয়েছে মৃত্যুর ভয়,,মনে রাখবেন পথটা মৃত্যুর যাত্রা,,,
।
এসব বলতে বলতে চলে গেলেন দুইটা পুতুল আমার হাতে রেখে।
কাজটা সুমিতের রুমেই বসে করলাম এতক্ষন।
সুমিত বিস্তারিত শুনে ভয়ে বারবার বলছে যাতে এই পথে না যাই,,যেহেতু সেখানে পদে পদে বিপদ আর মৃত্যুর আশংকা।
আমি সত্যি বলতে ভালো রকম টেনশনে পরে গেলাম,,,মনস্তাত্ত্বিক ভাবে চাপে আছি।
স্নেহাকে বললে হয়তোবা অনুমতি দিবে না,,কিন্তু বাবু তো কোন কিছু বলে না।
যাইহোক নিয়ত করলাম চার পাচ দিন পর যাবো,, আগে আপাতত এই তান্ত্রিকের রহস্য বের করে নেই।।
রাতটা কেটে গেল,, সকালে রাষ্ট্রদূতের সাথে উনার কার্যালয়ে দেখা করে আসলাম পরিবার সহ।
দুপুরের খাবার সেখানে সেরে বিকালের আগেই হোটেলে ফিরলাম।
সারাদিন ই মোটামুটি পুতুলের টেনশনে আছি, তান্ত্রিক আর এই রহস্য উন্মোচন করার জন্য মুখিয়ে আছি।
হোটেলে ফিরেই মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো।
পুরো রুমটা উলোটপালোট হয়ে আছে,, কাপড়চোপড় থেকে শুরু করে সব এলোমেলো, দেখেই বুঝা যাচ্ছে কেউ একজন সব তছনছ করেছে আর তার উদ্দেশ্য ছিল কিছু খোজাখুজি করা।
এটা মনে পরতেই সবার আগে পুতুলের কথা মনে পড়লো,,,দৌড়ে যেখানে পুতুল রেখেছিলাম সেখানে গিয়ে আরেক ধাক্কায় মাথায় আকাশ ভেঙে পড়লো কারন যেখানে পুতুল রেখেছিলাম সেখানে পুতুল নেই।
অনেক খোঁজাখুঁজি করার পরেও পাচ্ছি না,,সুমিত স্নেহা ও খোজায় সাহায্য করলো কিন্তু কোথাও পাত্তা নেই,, এদিকে বাবু শুধু মুচকি মুচকি হাসি হাসছে যা দেখে সত্যি গা জ্বলে যাচ্ছে।
মনটায় চাচ্ছে একটা আছাড় মারি,, কত বড় বিপদে পড়ে যাবো তার হদিস আছে.??
খোঁজাখুঁজি করে ক্লান্ত হয়ে সোফায় বসে পরলাম।
।
বাবুঃ- পাপ্পা আমি কিন্তু বলতে পারি পুতুল গুলো কোথায় আছে,,,
।
এতক্ষণে এই কথা শুনলে কার না রাগ উঠবে।
তিন জন মানুষের সারা শরীর দিয়ে ঘাম জড়িয়ে এতক্ষণে বলছে কোথায় আছে তা জানে,,
কিচ্ছু বললাম সা,,শুধু চোখটা বড় করে তাকালাম,
।
স্নেহাঃ- তাই বাবা আমার,,তুমি জানো কোথায় আছে.?? কিন্তু এতক্ষণ বল নি কেন..?
আচ্ছা বলো কোথায় আছে,,সেইফ আছে তো.??
।
বাবুঃ- আমি বলবু না😣😣
।
সুমিতঃ- এই মাত্র না বললা তুমি জানো আর তুমি বলবা,,
।
বাবুঃ- তোমরা দেখো না পাপ্পা আমার দিকে কিভাবে তাকিয়ে আছে..?
যদি আমাকে সরি না বলে তো আমি বলবু না😣😣
।
হায় আল্লাহ এ কি ছেলে দিলা আমায়🥶🤧🤧
জানি মুখ দিয়ে একবার বলে ফেলেছে সরি না বললে ওর মুখ দিয়ে উত্তর বের করা সম্ভব না।
তাই বাধ্য হয়ে সরি বললাম,,
।
বাবুঃ- পুতুল দুইটাকে খুঁজতে তান্ত্রিকের শয়তান জ্বীনেরা এখানে এসেছিল, পুরো রুম তন্নতন্ন করে খুজেছে কিন্তু তোমার আংটির চার জ্বীন আগে থেকেই তা সরিয়ে নিজেদের দখলে রেখেছে আর না কোন জ্বীন বা তান্ত্রিক সেই জায়গায় যেতে পারবে না পুতুল বের করতে পারবে।
।
যাক এতক্ষণে একটু হলেও ধম ফিরে পেলাম।
যাইহোক এবার শাস্তি দেওয়ার পালা।
যেহেতু পুতুল খুজতে এসেছিল তারমানে আমাদের প্লান কাজে লেগেছে।
রাতেই এর হেস্তনেস্ত করতে হবে,,কিন্তু তার আগেই ফোন আসলো বাংলাদেশ থেকে,,
রিসিভ করতেই,,,
হেডকোয়ার্টার থেকে স্যারঃ- হ্যালো কৌশিক আহমেদ বলছেন..?
।
আমিঃ- জি স্যার বলুন কিভাবে সাহায্য করতে পারি,,,.??
।
স্যারঃ-আপনাকে মৌখিক ভাবে বা কাগজে কলমে যে মিশন দিয়ে পাঠানো হয়েছে সেইটা কিন্তু শুধু মাত্র নিয়মতান্ত্রিকতা।
বাস্তবে মিশনটা ভিন্ন।
।
আমিঃ-What......??
বুঝলাম না,,এটা কেমন কথা,, তাহলে আমি কি মিশনে এসেছি???(যদিও আগে থেকেই আন্দাজ করে রেখছিলাম)
।
স্যারঃ-আমাদের এখানে (একটা মন্ত্রীর নাম উল্লেখ করে) উনার উপর ব্লাকমেজিক করা হয়েছে আর সেইটা করা হয়েছে আপনাকে যেখানে পাঠানো হয়েছে সেখানের এক তান্ত্রিক দ্বারা,শুধু উনাকে না,,উনার পুরো পরিবারকেই করা হয়েছে।
যদিও এর সঠিক কোন ব্যখ্যা নেই তাই আপাকেই বের করতে হবে এর আসল রহস্য,, কেনোই বা এই কাজটা করা হয়েছে আর কি জন্য বা কে করলো।
।
এরপর বিস্তারিত কাহিনী বললো কি কি সমস্যা দেখা দিচ্ছে সেই মন্ত্রী ও উনার পরিবারের সাথে আর সব শুনে বুঝতে পারছি এরাও ভুডু হাতে আক্রান্ত আর আমি ১০০% শিওর যে এটাও শুধু মাত্র আমাকে এখান পর্যন্ত নিয়ে আসার জন্য করা হয়েছে,, মুলত মন্ত্রী বা উনার পরিবারের কারোর সাথে কোন শত্রুতার সূত্রপাত ধরে না।
এটা একটা ফাঁদ আর আমাকে সেই ফাঁদে ফেলা হয়েছে,, যাক দেখা যাক কি হয়।
।
বিকালটা ঘুরাঘুরি করে কাটালাম,,
দরবেশ টাইপের জ্বীনদের কথা মতন রাত ১২ টার দিকে আমরাও ধ্যানে বসলাম,,আমরা বলতে সুমিতের রুমে আমি আর সুমিত।
আশেপাশে জ্বীন চারজন আছে,,উনারা দিক নির্দেশনা দিচ্ছেন আর আমি আর সুমিত কাজ চালিয়ে যাচ্ছি,,মূল লক্ষ আগে তান্ত্রিক ধরা পরে কে কাজ করাচ্ছে কোন শত্রু করাচ্ছে তার খোঁজ নেওয়া।
ধ্যানে বসার আগে পুরো রুমের আলো নিভিয়ে দিলাম,,শুধু মাত্র একটা ডিম লাইট অন রাখলাম যা মৃদু মৃদু আলো দিচ্ছে,, যেখানে বসেছি তার চারপাশে গুনে গুনে ২১টা মোম জ্বালিয়ে রেখেছি যার ফলে পুরো রুম আলোকিত হয়ে গেছে।
আর আমি সুমিত সামনাসামনি বসে আছি আর আমাদের মাঝখানে একটা কাঁসার থালায় কিছু পানি রেখে দিয়েছি যেখানে দেখা যাবে কে বা কোন তান্ত্রিক কাজটা করেছে, তার পরিচয় সহ সব বিস্তারিত জানতে পারবো।
গোল বৃত্তে বসে জ্বীনদের বলে দেওয়া মন্ত্র উচ্চারণ করছি,,কেমন জানি একটা ঘোমট ভাব বিরাজ করছে রুমটাতে।
থমথমে পরিবেশ, গা ছমছমে উঠে।
মাঝেমধ্যে মৃদু বাতাস এসে গা শিউরে ওঠে।
শরীরটা কেমন অবস হয়ে যাচ্ছে,, বুঝতে পারছি আমরা ছাড়াও অন্য কেউ বা কারোর উপস্থিতি রুমে আছে।
জ্বীনদের কথা মতন হাতের তাবিজ খুলে রেখেছি।
আস্তে আস্তে পানির রং পরিবর্তন হচ্ছে, পানি থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছে, ফুটন্ত পানির মতন টগবগ করছে, থালার চারপাশে বৃত্তকারে পানি ঘুরছে,, হঠাৎ করেই সেখানে একটা মুখ ভেসে উঠলো তা শুধু মাত্র এক পলকের জন্য দেখেছি আর সঙ্গে সঙ্গে ঠাস করে রুমের ডিমলাইটটা ফেটে গেল আর আতংক নিয়ে চোখটা না চাইতেও সেদিকে চলে গেল।
অবস্থা বুঝার আগেই সব গুলা মোম নিভে গেল।
রুমের ভিতর অন্ধকার নেমে আসলো আর বাতাসে রুমের সব এলোপাতাড়ি উড়াউড়ি করছে,,আসবাবপত্র গুলো মনে হচ্ছে ভেঙে চুড়ে যাচ্ছে।
একটা আরেকটার সাথে আগাত লাগছে আর মটমট করে শব্দ হচ্ছে, বুকটা ধুকপুক শুরু করলো।
সুমিত ভয়ে আমার হাত চেপে ধরলো।
এমন সময় হাড় চাবানোর শব্দ আর অট্ট হাসি শুনতে পাচ্ছি, হুট করেই কিছু বুঝে উঠার আগেই কেউ পিছনে থেকে চেপে ধরে আর মাথায় আগাত করে সঙ্গে সঙ্গে অজ্ঞান হয়ে যাই।
যখন জ্ঞান ফিরে পেলাম তখন মুখের উপর সূর্যে আলো পেয়ে জ্ঞান ফিরে আসে। তাকিয়ে দেখে থতমত খেয়ে গেলাম কারন আমি তখন তান্ত্রিকদের আস্তানায়, আমাকে অজ্ঞান অবস্থায় তুলে আনা হইছে। হাতে আংটিটা না থাকায় কোন শক্তি ব্যবহার করতে পারছি না।
এদিকে আমাকে ঘিরে দাড়িয়ে আছে শত শত তান্ত্রিক আর আমার ঠিক সামনের দিকে একটা বিশাল বড় মূর্তি আর মূর্তির ঠিক পায়ের কাছে একটা রাম দা,,সিঁদুর, লাল রং,আর চারদিকে বৃত্তাকারে ছোট ছোট মুর্তি ও মোম জ্বালানো।
দেখেই বুঝা যাচ্ছে আমাকে বলী দেওয়ার জন্য আনা হইছে,, নরবলি, শয়তানকে খুশি করতেই এটা করা হয়,কিন্তু আমাকে কেনো.?
আমার জানা মতে কোন ভাবেই তো আমাকে বলি দেওয়ার কোন কারন খুঁজে পাচ্ছি না।
এরা সবাই নরবলি দেওয়ার সকল কার্যক্রম শুরু করে দিয়েছে,, নিজের উপর নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলছি,,তান্ত্রিক গুলো জোরে জোরে মন্ত্র উচ্চারণ করতে শুরু করলো,, এতে আরো বেশি দূর্বল হয়ে যাচ্ছি।
শক্তি কমে যাচ্ছে, চোখ গোলা হয়ে যাচ্ছে।
চোখ খুলে রাখতে পারছি না,, এমন সময় একজন এসে আমাকে ফাঁদে আটকালো,,এখন আমার শরীর থেকে মাথাটা আলাদা করে দেওয়া হবে,,তখন পর্যন্ত কোন শক্তি পাচ্ছি না,, শুধু মনে মনে আল্লাহকে স্বরন করতে করতে আবারো অজ্ঞান হয়ে যাই।আর যখন জ্ঞান ফিরে তখন আমি হোটেলের রুমে,,তাহলে এতক্ষণ কি ঘটলো আমার সাথে..?
আমি কি কোন স্বপ্ন দেখলাম নাকি ঘোরে চলে গিযেছিলাম,,হাতের দিকে তাকাতেই ভয়ে ছিটকে সরে পরলাম কিছু দূরে,কারন হাতে তখনো সিদুর লাগানো,,,স্নেহা আমার অবস্থা দেখে বিস্তারিত বলতে শুরু করলো, কারন যা দেখেছি সবটাই সত্যি ছিল আর সেই তান্ত্রিক সহ তার সকল সঙপাঙ্গের পতন ঘটেছে, যেভাবে ঘটেছে তার বর্ণনা ঠিক এমন,,,,
.................................................................................
0 Comments