অবহেলা না ভালোবাসা ♥
Writer_Kabbo_Ahammad
--রিয়া আজকে একটু দেখা করতে পারবা..?
অনেকদিন ধরে আমাদের কোনো দেখা সাক্ষাত হয় না.?(আমি)
--ও স্যরি কাব্য আজকে দেখা করতে পারছি না। অন্যদিন দেখা হবে কেমন.?
আজকে আমার ম্যাথম্যাটিক্স-২ এসাইনম্যান্ট আছে।(রিয়া)
--আচ্ছা ঠিক আছে অন্যদিন নাহয় দেখা করবো। ভালোভাবে এসাইনম্যান্ট করো।(আমি)
--হুম....(রিয়া)
এইটুকু কথা বলেই রিয়া ফোনটা রেখে দিলো। একটাবারও খোঁজ নিল না আমি কেমন আছি?
সে এরকম তো ছিলো না। তাহলে কী আমি তাকে আজও চিনতে পারি নি। আমারি কি ওকে চিনতে কোথাও ভুল হয়েছে। এসব ভাবছিলাম আর টেইলর সুইফ এবং এলি গোল্ডউইং-এর গান শুনছিলাম।
.
.
.
ও আপনাদের তো আমাদের পরিচয় টা দেয়া হলো না । আমি কাব্য আহমেদ(নীল) । বাবা-মায়ের আদরের তিনমাত্র সন্তান মানে তৃতীয় সন্তান। অনার্স শেষ বর্ষের ছাত্র আমি। আর এতোক্ষণ যার কথা বলছিলাম, সে হচ্ছে রিয়া।
রাহিয়া চৌধুরী রিয়া। বাড়ি চট্টগ্রাম আমার আম্মুর বান্ধাবীর মেয়ে। সেই সূত্রে ওর সাথে আমার পরিচয়। পরিচয় থেকে ভালোলাগা। আর ভালোলাগা থেকে
ভালোবাসা।♥
.
.
.
.
ওর সাথে আমার রিলেশনশিপটা এসএসসির পর
থেকেই। কিন্তু বর্তমানের রিয়া আর অতীতের
রিয়ার সাথে অামি আর মিল খুঁজে পাই না। রিয়া আগে আমার অনেক কেয়ার নিতো, আর অভিমানটাও আহ্লাদী সুরে ভাঙ্গাতো। কিন্তু এখন সে অনেক ব্যস্ত। হয়তো তার লেখাপড়া নিয়ে। তাই হয়তো সময়
দিতে পারছে না। যাইহোক ওর ভালোটা আমিও চাই। তাই সবকিছু মেনে নেই। কিন্তু আমার ছোট ছোট আবদার গুলোও কী পূরণ করতে পারে না। খুব বেশী কিছুতো চাই নি। শুধু আমাকে একটু সময় দিবে। তাও ওর এটুকু সময় হয়ে উঠে না তারপরও আমি রিয়াকে অনেক বেশী ভালোবাসি।♥
.
.
.
.
মাগরিবের আযানের সুর ভেসে আসলো পাশের মসজিদ থেকে। গানটা বন্ধ করে উঠে আস্তে আস্তে বাসার উদ্দ্যেশে হাঁটতে লাগলাম। আর আনমনে ভাবতে লাগলাম ফেলে আসা দিনগুলো। এসব ভাবতে ভাবতে বাসায় চলে এলাম। এসে ফ্রেশ হয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলাম। একটা থ্রিডি ডিজাইন করতে হবে। আম্মু এসে চা দিয়ে গেলো। চা খাচ্ছিলাম। হঠাৎ ফোন আসলো একটা নাম্বার থেকে। যার কোড সংখ্যা নয়টা। আমি
পিকআপ করতেই, বললো....
--Hello Are You Kabbo Ahammad.?
--Yes I'm Kabbo Ahammad (আমি)
--Good. You are selection for study in Australia.
University of Melbourne.....
(ভালো আপনি অস্ট্রেলিয়ায় পড়াশুনার জন্য নির্বাচিত হয়েছেন। মেলবোর্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে)
--Really..?
I'm Very Excited. Thanks For your good news.
(সত্যি..?
আমি অনেক আনন্দিত আপনার সুসংবাদটা দেওয়ার জন্য ধন্যবাদ।
--Oky Good Bye....
--Oky Thanks..
.
.
.
আমি খবরটা শুনে খুশিতে আম্মুকে জড়িয়ে ধরলাম। আর বললাম...
--আম্মু আমি অস্ট্রেলিয়াতে পড়ার চান্স পেয়েছি।
আর আমার কথাটা শুনে আম্মু সাথে সাথেই খুশিতে কেঁদে ফেললো। তারপর খুশিতে আমার কপালে একটা চুমু দিয়ে চলে গেলো বাবাকে খুশির খবরটা
জানাতে। আম্মুরা হয়তো এমনই হয়, সন্তানের
আনন্দের সংবাদ শুনে যেমন কাঁদে। তেমনি
দুঃখের সংবাদ শুনেও কাঁদে। গুড নিউজ টা শুনে আব্বু ও কেঁদে দিলেন। অজান্তে আমার চোখ থেকেও দু'ফোটা জল গড়িয়ে নিচে পড়লো। আমি এবার বেসিনে গিয়ে চোখে পানির ঝাপটা দিয়ে আসলাম। আর ল্যাপটপটা বন্ধ করে ভাবলাম। রিয়াকে তো গুড নিউজটা জানানো দরকার। আর এমন সময় এসে আম্মু ডিনারের জন্যে ডাকলেন। তাই ভাবলাম খাওয়া দাওয়া শেষে জানাবো।
.
.
.
খাওয়া দাওয়া শেষ করে এসে রিয়াকে ফোন দিলাম। রিং হচ্ছে কিন্তু কেউ পিকআপ করছে না। প্রায়
অনেকবার রিং-এর পর ফোন ধরলো রিয়া।, ধরেই
বলতে লাগলো।
--এতো বার ফোন দেওয়া লাগে নাকি? জানোনা আমি এই সময়ে ব্যস্ত থাকি।
রিয়া অনেক রেগে বললো কথাগুলো। তাই আমি কিছু না বলে চুপ করে আছি...। আমার চুপ করে থাকা
দেখে ও আবার বললো...
--কী হলো কথা বলছো না কেন ফোন দিয়ে? গাধা কোথাকার। কোন ছাগলের পাল্লায় যে পড়লাম আল্লাহ।
আমি চুপচাপ শুধুই ওর বলা কথা গুলো শুনছিলাম আজকে ওর গাধা বলায় অন্য দিনের মতো ভালোবাসা,
আর আদর মিশ্রিত ছিলো না। আজকে খুব বিরক্তি ও অবহেলা করে বলেছে রিয়া কথাগুলো। সে আমাকে এভাবে কখনো বলে নি। তারপর আমি ওসব বাদ দিয়ে বললাম.......
--স্যরি রিয়া অসময়ে ফোন দেওয়ার জন্যে...।
(একটু কান্নাময় কণ্ঠে)
--কিহ্ এখন ঢং শুরু করেছো?
অভিনয় না করে সোজাসুজি বলো কেন ফোন দিয়েছে...?
--দুপুরে খেয়েছিলে.?
--না। তুমি খেয়েছো.?
--হুম।
--আমার বদলে তুমি খেয়েছো। আমার না
খেলেও চলবে। (রাগ নিয়েই বললাে)
--ওহহহ...!!! আচ্ছা রাত্রে খেয়েছো...?
--না।
আর আমার খাওয়া নিয়ে তোমার এতো মাথাব্যাথা
কেন.?? তুমি তোমার টা নিয়ে ভাবো।(রিয়া)
--তুমি তো আমার প্রিয় মানুষটা তাই তোমার কেয়ার না নিয়ে কার কেয়ার করবো বলো!!!!
--যত্তোসব ঢং।
আমি খাই না খাই তা আমি নিজে বুঝবো। তোমাকে বলে দিতে হবে না। আর আমার যদি এতোই কেয়ার নেও তাহলে পড়ার সময়ে আর ফোন দিবে না।
--আচ্ছা ঠিক আছে।
তুমি ঠিক ঠাক মতো পড়ো, খাওয়া-দাওয়া করবে।
ঠিক মতো ঘুমাবে না হলে শরীর খারাপ করবে। তখন আবার ভালোকরে পড়তে পারবে না ওকে।।।।
(কান্না আটকিয়ে ফুঁফিয়ে ফুঁফিয়ে কথা গুলো বললাম)
তারপর রিয়া আমার কথাগুলো শুনে আমাকে ছাগল বলে ফোন রেখে দিলো।
.
.
.
রিয়ার সাথে কথা বলার পড়েই সাথে সাথে ওয়াশরুমে চলে গেলাম। তারপর ওয়াশরুমে গিয়ে ট্যাপ ছেড়ে কিছুক্ষণ খুব কাঁদলাম। কেনোনা শুনেছি কাঁদলে নাকি মানুষের মন হালকা হয়। কিন্তু আমার মনটা এতো কাঁদার পড়েও হালকা হচ্ছিলো না। তখন আমার মনে হচ্ছিলো কেউ আমার বুকে পা দিয়ে চাপ দিয়ে ধরে রেখেছে। তারপর খুব কান্না করলাম রাত্রে। আর কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে পড়লাম।
.
.
.
সকালে আম্মুর ডাকে ঘুম থেকে উঠলাম। তারপর ব্রেকফাস্ট করে, উঠে নিজের কাগজপত্র সবকিছু রেডি করলাম। জমা দিতে হবে। খুব বেশী দিন সময় নেই আর আমার হাতে। কিন্তু এই সুখবরটাও রিয়াকে এখনো জানাতে পারলাম না। ওর কথা মনে পড়তেই আবারো আমার চোখ দিয়ে পানি চলে এলো মনে হলো গতকাল রাত্রের কথা।
তারপরেও এতো কিছুর পরেও আমি রিয়াকে ফোন দিয়ে ওর খোঁজ খবর নিতাম।
ওর খাওয়া-দাওয়া,পড়া-শোনার খবর নিতাম।
কিন্তু ও?
ও ওর মতোই নির্লিপ্তি থাকতো। আর আমার সাথে তেমন খুব একটা ভালোভাবে কথা বলতো না। তখন আমার ওর কাছে নিজেকে খুব নিঃস্ব মনে হতো।
এখন আর রিয়া রাত্রে আমায় ফোন দেয় না। ও হয়তো ব্যস্ত থাকে ওর পড়াশোনা নিয়ে। কিন্তু আমার রাত্রে ও কী খাওয়া-দাওয়া করেছে কিনা জানতে ইচ্ছে করতো খুব।
মাঝে মধ্যে ফোনও দিয়ে দিতাম। আর ও খুব বকতো আমার, মনে হয় আমি ওর কাছে কোনো গুরুত্বই বহন করছি না। আমার খুব কষ্ট হতো তখন। বুক ফেটে কান্না আসতো। ছাদে বসে খুব কাঁদতাম। ভালোবাসার শুরুটা আবেগ-এ হলেও পরিণতিটা যে অবহেলায় হয়, আজ তা বুঝতে পারলাম'ওর কাছ থেকে।
ছাদে বসে আমি অনেক জোরে জোরে কান্না করলাম। আর উপর ওয়ালা কে বলতে লাগলাম যে।
:-হে আল্লাহ্ কী অপরাধটা ছিল আমার যার জন্য আমাকে তুমি এমন করে কষ্ট দিচ্ছো।
কষ্ট যদি দাও তবে সইবার ক্ষমতা দাও না কেন?
আমি আর কষ্টগুলো বহন করতে পারছি না।
আমায় তোমার কাছে নিয়ে যাও। আমার এ কান্নার শব্দগুলো অনেক দূরে মিলিয়ে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ জানে না এই কান্নারর কারণটা কী।।।।।
.
.
.
তারপর আস্তে আস্তে আমাে কান্না কমে আসলো। নিজেকে এখন খুব ভারি বোঝা মনে হলো নিজের কাছে....। তারপর খুব কষ্টে রুমে চলে এলাম। এসে না খেয়েই শুয়ে পরেছি। ফ্রেশ-ট্রেশ কিচ্ছু হইনি। আম্মু
ডাকছিলো, বললাম ক্ষুধা নেই।
.
.
এর মধ্যে এগিয়ে আসছে ১৪ই ফেব্রুয়ারী। এই দিনটা তাকে নিয়ে কাটাতে চাই, যেভাবেই হোক.....
.
এজন্য ফোন দিলাম রিয়াকে...। কিন্তু সে না ধরে ওর আম্মু ধরলেন...
--হ্যালো..!!(তুবার আম্মু)
--আন্টি. আসসালামু ওয়ালাইকুম..।(আমি)
--ওয়ালাইকুম আসসালাম। কেমন আছো বাবা কাব্য?
তোমার আব্বু আম্মু কেমন আছে.??
--জ্বী আন্টি আলহামদুলিল্লাহ্ আমি ভালো আছি।
(মিথ্যা বললাম) আর আব্বু-আম্মুও ভালো আছে..। আর আপনারা কেমন আছেন.?
--হ্যাঁ বাবা আমরাও সবাই ভালো আছি। আর আমি শুনলাম তুমি নাকি অস্ট্রেলিয়া চান্স পেয়েছো বিএসসি করার জন্য?
--আলহামদুলিল্লাহ্ জ্বী আন্টি দোয়া করবেন।
--তাতাে অবশ্যই।
ওখানে গেলে আমাদের ভুলে যেও না আবার।
--কী যে বলেন আন্টি..?
আমি কি আর আপনাদের ভূলতে পারি!! নাহ্ আন্টি আমি আপনাদের কে কখনই ভুলতে পারবো না। আন্টি রিয়া কই..?
--রিয়া তো ওর রুমেই আছে.... ওয়েট করো দিচ্ছি।
.
.
কিছুক্ষণ পরে.......
--হ্যালো....!!!(রিয়া)
--কেমন আছো রিয়া...?
--আছি ভালোই।
খারাপ থাকার তো কোনো কারণ নেই।
(তাচ্ছিল্যেরর সুরে)
--ওহহ। ভালো..! (একটা দীর্ঘশ্বাস ছাড়লাম)
আমি কেমন আছি জানতে চাইবে না।
--না।
কারণ তুমি ভালো আছো...। সেটা আমি খুব ভালো করেই যানি.!
আমি ওর বলা কথা গুলো শুনে মনে মনে অনেক বেশী কষ্ট পেলাম। তারপরেও:-
--নাহ্ আমি একটুও ভালো নেই। তোমায় ছাড়া.!(কেঁদেই দিলাম এবার)
--হুম! বুঝলাম।
--রিয়া প্লিজ আমায় এভাবে আর কষ্ট দিও না। আমি খুব মিস করি তোমায়। তোমায় জন্য কাঁদি খুব।
প্লিজ তুমি এমন পাশান মনের মানুষ হয়ো না।
(কাঁদার কারণে ফুঁফিয়ে বের হচ্ছে কথা)
--কাব্য আবারো তোমার সেই ন্যাকা কান্না শুরু করে দিলে। যত্তোসব..!!! দিলে তো মুডটাই নষ্ট করে।
--আচ্ছা রিয়া আমার কথা কী তোমার একবারও মনে
পড়ে না.?
--না মনে পড়ে না । তবে পড়লেও খুব কম।
--আচ্ছা তুমি তো এমন ছিলে না.। কতো ভালোবাসতে আমায়। কেয়ার করতে.। আজ এমন হলে কেন.?
কেন রিয়ক কেন...? (জোরে কেঁদে দিলাম)
--সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে কাব্য, হ্যাঁ সময়ের পরিপ্রেক্ষিতে, আর তুমি একটা বোরিং ছেলে.! তোমার সাথে কথা বলতে ভালো লাগে না আর অমার।
--এমন করে বলো না প্লিজ। আমার খুব কষ্ট হয়।
--এই তোর মতো ছেলেকে কী ভাবে বলবো রে। আহ্লাদ করে। এই সময় আর আমার নাই। আর তুই আমাকে ফোন দিবি না। ডিসগাস্টিং......টুথ টুথ টুথ.!
এই বলেই ফোনটা খুব জোরে রেখে দিলো রিয়া। এদিকে ওর বলা কথা গুলো শুনে আমার অনেক কান্না
আসছে চোখের জলগুলো বাঁধ মানছে না। আমি মানতেই পারছি না যে রিয়া আমাকে এভাবে হার্ট করতে দ্বিতীয়বার ভাবছে না। হে খোদা সবাই কেন এতো কষ্ট দেয়।
রিয়া কী আমাকে একটু ও আর বোঝে না। জবাব দাও খোদা..?? জবাব দাও......???
এসব বলে কাঁদতে কাঁদতে ঘুমিয়ে গেলাম।
.
.
.
সকালে উঠে ব্রাশ করতে করতে আয়নায় দেখছি
নিজেকে। নিজেকে নিজেই চিনতে পারছি না।
সব কিছু থেকেই যেন প্রাণ হারিয়ে গেছে।
কোনো চঞ্চলতা নেই। সবকিছু প্রাণহীন লাগে। খাবারটাও স্বাদহীন....। আর এমনিতেও মন ভালো থাকলে সবকিছু ভালো থাকে.....
.
এভাবে আরো কিছুদিন অতিবাহিত হয়ে গেল।
এই কয়েকদিনে আম্মু আমার অবস্থাটা বুঝতে
পারেছে। এটা নিয়ে রিয়ার আম্মুর সাথেও মনে
হয় কথা বলেছে। আর এটা আমার সাথে ব্রেকফাস্ট টেবিলে কথা বলার সময় বোঝতে পারলাম।
.
তারপর রিয়ার আম্মু হয়তো রিয়াকে বুঝিয়েছে.! তাই আজকে রিয়া ফোন দিলো বিকেলে আমাকে.! আর আমিতো ওর ফোন পেয়ে খুশিতে আত্তহারা।
--হ্যালো...।
--হ্যালো কাব্য কোথায় তুমি.?(রিয়া)
আমার তো খুশিতে কথাই বের হচ্ছে না। ওফোন দিয়ে
কথা বলছে দেখে....।
--আআআ আমি...।
বাসায়.। কেমন আছো তুমি.?
--এইতো ভালো।
আজকে সন্ধ্যায় তুমি সিপি ফাইভ স্টারে দেখা করবে?
--আচ্ছা ঠিক আছে...
আমি ওর সাথে কথা বলতে পেরে খুশি মনে ওয়াশরুমে ঢুকে সেভ করে নিজেকে ফ্রেশ করে নিলাম। তারপর রেডি হলাম আস্তে আস্তে....।
বিকেলবেলা আমি ওর জন্যে বসে আছি। অনেক্ষণ ওয়েট করার পর রিয়া আসলো। এসেই বসলো মুখোমুখি চেয়ারে.। তারপর সে ওর হ্যান্ডব্যাগ থেকে টিস্যু বের করে মুখটা মুছলো। আর এদিকে আমি ওর দিকে শুধুই তাকিয়েই আছি.। রিয়া ওর মুখ মুছে আমার দিকে খেয়াল করলো। এতো সময় ধরে যে তার সামনে একটা ছেলে বসে আছে হয়তো তার মনেই হচ্ছে না.। তাই আমিই বললাম....
--কেমন আছো রিয়া....???
--হুম। ভালোই...।
কী বলবে তাড়াতাড়ি বলো আমার সময় নেই...।
--দুপুরে খেয়েছিলে..?
--তুমি এগুলো বলতে আমায় ডেকেছো.?
আমি শুধুই মাথা নাড়লাম.। ও আবার বললো...
--আচ্ছা আমি যে কারণে ডেকেছি তোমায়.।
--হুম বলো..। কি কারণে?
--আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমার পরীক্ষা শুরু হবে। তাই আমি চাইনা তুমি আমার আম্মু বা আমাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব কর...।
আর………………………
.
part_2
:--আগামী কয়েকদিনের মধ্যে আমার পরীক্ষা শুরু হবে। তাই আমি চাইনা তুমি আমার আম্মু বা আমাকে ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব কর.!!
আমি রিয়ার কথায় শুধু মাথা নাড়লাম। এমনিতেও রিয়ার বলা কথাগগুলো শুনে আমার চোখে অশ্রু ভীড় করছে। আমি মাথা নিচু করে আছি। কারন ওকে বুঝতে দিব না তাই।
তারপর রিয়া আমার মাথা নাড়ানো দেখে আবার বললো।
(তবে এবার একটু রেগে গিয়ে বললো,)
--কাব্য তোমার কী কিছুই বলার নেই?
;-হুম। আছে...
(খুব ছোট্ট করে ভাঙ্গা গলায় বললাম....)
--হ্যাঁ তাহলে বলো কী বলবে?
--ভালো ভাবে পরীক্ষা দিয়ো। টিক মতো খেয়ো। সময় মতো ঘুমিয়ো। আর নিজের যত্ন নিয়ো।
আমার কথাগুলো শুনে রিয়া খুব রেগে গিয়ে আমাকে বললো:-
--এই তোর কী এসব ছাড়া কোনো কথা নেই। আমি আমার মতো থাকবো তাতে তোর কী.? আর তুই আমার খোঁজ করবি না। তোর কেয়ার গুলো
আজ আমার বিরক্ত লাগছে। আমাকে মুক্তি দে তুই এসব থেকে.। (রিয়া)
এই বলেই রিয়া আমার কাছ থেকে হনহনিয়ে চলে গেলো। আর এদিকে আমি কান্না ভেঁজা চোখ নিয়ে ওর গমন পথের দিকে তাঁকিয়ে থাকলাম। ও আমার চক্ষের আঁড়াল হয়ে যাবার সাথে সাথেই আমি ডুকরে কেঁদে উঠলাম। হয়তো অনেকেই হাঁসছে। কিন্তু তারা তো আমার কষ্ট বুঝবে না। তারা তো আর এটা জানে না যে আমি এখানে কেনো কাঁদছি। তারপর হঠাৎ কেউ একজন এসে আমার পিঠে হাত দিয়ে মাথায় হাত
দিলো। আমি চোখগুলা বাম হাত দিয়ে মুছে তার দিকে তাকালাম। দেখলাম একটা ছেলে আমার দিকে তাঁকিয়ে আছে। আমি চোখ তুলে তাকানোতে বললো...
--ভাইয়া এভাবে কেঁদোনা, একসময় সব ঠিক হয়ে যাবে...??(ছেলেটা)
--সত্যিই কী ঠিক হবে ভাইয়া.। চাইলেই কী সব ঠিক হয়...(ভাঙ্গা কণ্ঠে বললাম আমি)
--এখন বাসায় যান আর কাঁদবেন না.। সবাই তাকাচ্ছে আপনার দিকে...!!!
--হুম....।
এই বলেই সেখান থেকে সোজা বাসায় চলে আসলাম।
আর বাসায় এসেই আমি আম্মু আর আব্বুকে ধরে খুব কাঁদলাম.। তারপর বললাম :-
--আম্মু তোমার ছেলেতো কাউকে কষ্ট দেয় নি জেনে-শুনে.? তাহলে সবাই আমাকে কেন কষ্ট দেয়?
আমার কথা শুনে আম্মুও আমাকে জড়িয়ে ধরে বললেন :-
--কী হয়েছে তোর বাবা? তুই এভাবে কাঁদছিস কেন? আমাকে বল.! এই বলেই আমার সাথে আম্মুও কেঁদে দিলো...।
--আম্মু তুমি তোমার পাগল ছেলেটাকে ক্ষমা করে দিয়ো। তোমায় হয়তো না বলে কষ্ট দিয়েছি কতো?
--কী বলছিস তুই যাতা কথা। তুই এরকম তো করিস না কখনো হঠাৎ আজ কি হলো?
( আম্মু কান্নাভেঁজা কণ্ঠে খুব কষ্টে বললো..)
তারপর কাঁদতে কাঁদতে বাবাকেও বললাম...
--বাবা আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো. আমি হয়তো তোমায়
কতো কষ্ট দিয়েছি...???
বাবা এবার আমার কথা শুনে কেঁদে ফেললো তারপর।
--কী বলছিস বাবা তুই এসব। আর তুই এমন করছিস কেন? তোর কি হয়েছে রে বাবা....!!! (বাবা)
--না বাবা।
আমি জানি যে আমি তোমাকে আর মাকে খুব জ্বালাই, আর তোমরাও আমার দেয়া কষ্ট গুলো মুখ বুঝে সহ্য করো। তাই তোমরা আমাকে ক্ষমা করে দিয়ো প্লিজ। (কথা গুলো অনেক কেঁদে কেঁদে বললাম )
:- আর জানো বাবা এখন আমার না নিজেকে খুব একা একা লাগছে। নিজেকে যেন হাঁরিয়ে ফেলেছি আমি বাবা। হঠাৎ আমার এমন কথা শুনে এবার আব্বু-আম্মু দুজন ই এক সাথে কেঁদে উঠলেন। তারপর বললো।
--না বাবা। না। কী উল্টাপাল্টা বকছিস তুই এসব? তুই আমাদের ছেলে... আর কিছুই বলতে পারলেন না আব্বু-আম্মু। দু'জনেই সমানে কাঁদছেন। সাথে আমিও কাঁদছি.....।
একটু পর তাদেরকে ছেড়ে সেখান থেকে রুমে চলে
আসলাম। রুমে এসে ফ্রেশ হয়ে না খেয়েই শুয়ে পড়লাম। আম্মু এসে ডাকতে শুরু করলো। আব্বু দরজা খুলতে বললো। আমি দরজা খুলে দেখি। আব্বু
ভাতের প্লেট হাতে নিয়ে দাঁড়িয়ে আছে। রুমে ঢুকে বেডে বসলো, আমাকে তার পাশে বসিয়ে নিজ হাতে খাঁইয়ে দিলো আব্বু। আম্মু পানির গ্লাস নিয়ে আব্বুর পাশেই দাঁড়িয়ে আছে। হয়তো চলে যাবো বলেই আম্মুর আর আব্বুর একটু কষ্ট হচ্ছে। কেনোনা তারা আমাকে ছাড়া কিছুই বুঝেন না। তারা দুইজনিই আমাকে নিজের থেকেও বেশি ভালোবাসেন।
.
.
.
এদিকে এরমধ্যে আমার অস্ট্রেলিয়া যাওয়ার সময় চলে
এসেছে। সামনের সপ্তাহে চলে যাবো। নিজেকে একটু গোছাতে ব্যস্ত ছিলাম তাই আমার আর রিয়ার খোঁজ
নেওয়া হয় নি।
তবে ওর অনেক গুলো পরীক্ষাই শেষ হয়েছে। তবে পরীক্ষা গুলো কেন জানি ভালো হয় নি। তাই চলে যাওয়ার আগে যদি একটু দেখা করা যেতো। কিন্তু ওর পরীক্ষা তাই ওকে ডিস্টার্ব করিনি।
আর তাছাড়া ও তো আর আমার সাথে দেখা করতে না করেছিলো তাই আর আমিও ওর সাথে দেখা করিনি.
.
.
.
এভাবে সময় চলার পথে। আস্তে আস্তে আমার অস্ট্রেলিয়া চলে যাওয়ার দিন চলে এসেছে। নিজেকে খুব একা একা লাগছে। আম্মু-আব্বু আর রিয়ার আম্মু-আব্বুও এসেছেন। আমার যাওয়ার সময় চলে এসেছে দেখে আমি আম্মু কে জড়িয়ে ধরে বললাম :-
--আম্মু আমার জন্য দোয়া করো। আমি যেনো তোমাদের সবাই ইচ্ছে পূরণ করতে পারি। এই বলে কেঁদে দিলাম। আর এদিকে আম্মুও আমাকে
জড়িয়ে ধরে ঢুকরে কেঁদে দিলেন। তারপর বাবা আমাকে বললেন :-
--বাবা টিক মতো খাওয়া-দাওয়া করিস। নিজের
খেয়াল নিস। (আব্বু)
--হুম আব্বু।
এই বলে চোখ মুছে বাবা বলে জড়িয়ে কেঁদে দিলাম। পৃথিবীতে বাবা মানুষটাই হয়তো এমন যাকে
খুব কমই কাঁদতে কম দেখা যায়।
--বাবা আমার জন্য দোয়া করো। আম্মুর আর তোমার
নিজের খেঁয়াল রেখো। (আমি)
--আরে কাঁদছিস কেন বাবা? কাঁদিস না। আমরা
ভালো থাকবো। তুই নিজের যত্ন নিস। আর আমাদের জন্য দূর্চিন্তা করিস না। (আব্বু)
--আচ্ছা বাবা। সময় মতো নিজের ঔষূধ গুলো খেয়ো। তারপর আমি আন্টি আর আঙ্কেল কে বললাম....
--আপনাদের অনেক মিস করবো। আম্মু-আব্বুকে একটু দেখে রাখবেন.?
--আরে বাবক তুমি সে নিয়ে ভেবো না। তুমি ভালো থাকলেই আমাদের ভালোথাকা.। (আঙ্কেল-আন্টি)
--জ্বী আঙ্কেল-আন্টি আমার জন্য দোয়া করবেন? আর রিয়াকে এই জিনিসটা দিবেন।
আন্টির হাতে একটা চিঠি দিলাম রিয়ার কাছ থেকে শেষ বিদায় নিতে। তারপর আব্বু-আম্মুকে নিচু হয়ে
সালাম করে বিদায় নিলাম। পিঁছু ফিরে আঁকাশের
দিকে তাকিয়ে হাঁটতে লাগলাম। আজ আঁকাশ টা খুব
মেঘলা। হয়তো আমার মনের মতো ওর মনটাও খারাপ....।।
এদিকে রিয়ার আম্মু বাসায় গিয়ে দেখে যে রিয়া কলেজ থেকে ফিরে এসেছে। তাই তিনি রিয়াকে ডেকে আমার দেয়া চিঠিটা রিয়ার হাতে দিলেন। চিঠিটা পেয়ে তারপর রিয়া হাতে চিঠিটা নিয়ে পড়তে শুরু করলো.......
.
.
.
রিয়া……………
হয়তো ভাববে প্রিয় বলে ডাকিনি কেন?
কারণ তুমি আমার কাছে প্রিয় হলেও। আমি যে তোমার কাছে প্রিয় শব্দটা আর নেই।
রিয়া তুমি হয়তো ভালোই আছো আমায় ছাড়া।
আর আমিও ভালো থাকবো যেমন তোমায় ছাড়া থাকার কথা।
ও হ্যাঁ তোমার জন্য আমার একটা খুশির সংবাদ আছে।
খুশীর সংবাদ এই যে আজ আমি তোমার থেকে অনেক দূরে চলে গেলাম। অনেক দূরে। তোমাকে আর ফোন দিয়ে ডিস্টার্ব করবো না। তোমায় আর আমি জ্বালাবো না। তোমায় অার আমার মতো কারো উপরে বিরক্ত হতে হবে না।
হ্যাঁ আগের মতো আর নিজের কেয়ার করবে কী না জানি না। তবে খুব মিস করবো তোমার বকা গুলো। কিন্তু চাইলেও তো আর শুনতে পারবো না।
কেনোনা আজকে আমি চলে যাচ্ছি তোমার থেকে অনেক দুরে। তুমি তোমার নিজের মতো করে কাউকে খুঁজে নিয়ো।
যে তোমার মনের মতো হবে। আমি হয়তো ছিলাম ভুল ছিলাম আর খুব বাঁজে ছিলাম।
কিন্তু আমার ভালােবাসাটা সত্যি ছিলো। যা তুমি দেখোনি। আমি তোমাকে হয়তো নিজের করে পাই নি। তবে তোমার স্মৃতিগুলো আমার নিজের।
যা দিয়ে আমি আমার সারাটাজীবন কাটিয়ে দিবো। আর কোনদিন আমার এই বিরক্ত কর কণ্ঠটা শুনতে পাবে না তুমি। দোয়া করি তুমি যেন আমার চাইতে ভালো কাউকে পাও।
যে তোমাকে খুব ভালোবাসবে তোমার মতো করে। আমার ভালোবাসাটা না হয় না পাওয়ায় থাক, তাতে দুঃখ নেই। কিন্তু তোমার কষ্টে যে আমার বুক ফেঁটে যাবে। আমার দেয়া কষ্টগুলোকে জীবনের খারাপ মুহূর্ত
মনে করে ভুলে যেও আমি দূর থেকেই তোমাকে ভালোবাসবো।
তুমি নিজেকে সুখী করো। আর কিছু বললাম না। কেনোনা তুমি আবার আমার উপরে বিরক্ত হবে।
তাই আর বিরক্ত করবো না তোমায়। পারলে ক্ষমা করে দিয়ো এই পাগলটাকে। যে তোমাকে তোমার মতো করে ভালোবাসতে পারে নি। ভালো থেকো। নতুন কাউকে নিয়ে খুশী থেকো।
আর পারলে এই পাগলটাকে শেষ বারের মতো ক্ষমা করে দিয়ো। আমি হারিয়ে গেলাম আজ থেকে চিরতরে। ভালো থেকো তুমি। খুব ভালো থেকো।
আমার কাছ থেকে দুরে গিয়ে। কেনোনা আমি তো তোমায় ভালোবাসতে পারলাম না। যাক সে সব কথা।
Bye........
.
ইতি.........
পাগল এবং বিরক্তিকর মানুষটা...
হয়তো তোমার/হয়তো বা না.......
.
.
.
এদিকে চিঠিটা পড়তে পড়তে ঝাপসা হয়ে গেলো রিয়ার চোখ। দু'ফোঁটা অশ্রু টুপ করে ঝরে পড়লো। চিঠির ভাজে। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। আজ খুব কাঁদবে সে। কারণ ওর তো খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু একটা কীসের শূন্যতা অনুভব করছে হৃদয়ের গহীন। ওর মনে হচ্ছে কি জেনো একটা ওর কাছ থেকে চিরোতরে
হারিয়ে যাচ্ছে। যেটা সে আর কখনোই ফিরে পাবেনা ।
.
part_3
:- এদিকে চিঠিটা পড়তে পড়তে ঝাপসা হয়ে গেলো রিয়ার চোখ। দু'ফোঁটা অশ্রু টুপ করে ঝরে পড়লো। চিঠির ভাজে। খুব কান্না পাচ্ছে ওর। আজ খুব কাঁদবে সে। কারণ ওর তো খুশি হওয়ার কথা, কিন্তু একটা কীসের শূন্যতা অনুভব করছে হৃদয়ের গহীন। ওর মনে হচ্ছে কি জেনো একটা ওর কাছ থেকে চিরোতরে
হারিয়ে যাচ্ছে। যেটা সে আর কখনোই ফিরে পাবেনা।
.
.
.
.
এভাবেই কেটে যায় আমার ৪ টা বছর। আজ আমি
আমার অস্ট্রেলিয়া থেকে স্টাডি শেষ করে দেশে ফিরলাম।
দেশে এসেই আমার মনে পড়ে গেলো সেই পুরোনো কষ্ট গুলো। মনে পড়ে গেলো সেই সব কথা। যার কারণে
আমি দেশ থেকে কাঁদতে কাঁদতে অস্ট্রেলিয়া চলে গিয়েছিলাম। আবারো আমার ওর কথা গুলো মনে পড়তে শুরু করলো। মনে পড়তে লাগলো রিয়ার দেওয়া সেই কষ্ট গুলোর কথা।
আমি যে রিয়াকে ছেড়ে অস্ট্রেলিয়ায় গিয়ে ওর কথা আমার আর মনে পড়েনি তা কিন্তু না। আমার ওর কথা সেখানে গিয়েও সারাক্ষণ মনে পড়তো। আর আমি ওর কথা ভেবে সারাক্ষণ সেখানে নীরবে কাঁদতাম।
তারপর আমি এসব কথা ভাবতে ভাবতে নিজের বাসায় চলে আসলাম। ও হ্যাঁ আর একটা কথা আমি যে দেশে আসবো সে কথাটা কিন্তু বাসার কাউকে জানাই নি। কারন সবাইকে সারপ্রাইজ দেবো বলে।
তারপর বাসায় এসে আমি আগে দরজার কলিঙ্গ বেলটা চাপলাম। আর আমার বেলটা চাপার কিছুক্ষণ পরেই আম্মু এসে দরজাটা খুললেন। দরজাটা খোলার সাথে সাথে আম্মু আমায় দেখে একদম কিছুক্ষণ শব্দহীন স্তব্ধ হয়ে গেলেন।
তারপর হঠাৎ দৌড়ে এসে কাঁদতে কাঁদতে আমায় জড়িয়ে ধরলেন। আর আম্মুর কান্না দেখে আমিও সাথে সাথে কাঁদতে লাগলাম। তারপরে আম্মু আমায় কাঁদতে কাঁদতে বলতে লাগলেন:-
----কাব্য তুই "বাবা' তুই কেমন আছিস হ্যাঁ ...!!
এতোদিন পড়ে কি তোর আমাদের কথা মনে পড়লো বল? জানিস আমি'আর তোর আব্বু প্রতিটা দিন তোর আশায় এই দরজার পথ চেয়ে বসে থাকি শুধু মাত্র তোর আশায়। শুধুমাত্র এইভেবে যে এই বুঝি তুই আজকে বাসায় আসবি। আর আসবি তো আসবি.
আসার আগে আমাদের একটা ফোন করে আসবি না।তাহলে আমি ও তোর আব্বু দুইজন মিলেই এয়ারপোর্টে তোকে আনতে যেতাম।
এই বলেই আবারো আম্মু কাঁদতে শুরু করলেন।
---আরে আরে আম্মু তোমাদের কথা সেখানে সারাক্ষণ মনে পড়তো। ইচ্ছে করতো সেখান থেকে ছুটে চলে আসি তোমার কাছে। কিন্তু আমি চাইলেই তো আর তোমাদের কাছে ছুটে আসতে পারবো না!!
আচ্ছা তুমি কেমন আচ্ছো আম্মু!! আর আব্বু কেমন আছে?
---আমরা সবাই এতোদিন তোকে ছেড়ে ভালো ছিলাম না। কিন্তু এখন সবাই ভালো থাকবো।
কেন না তুই এসে গেছিস না। তাহলে কি আর আমরা সবাই খারাপ থাকতে পারি। তুই তো আমাদের সবার ভালো থাকার ঔষুধ বাবা। আচ্ছা তুই কি বাসার বাইরেই দাড়িয়ে আমার সাথে কথা বলবি!!
নাকি বাসার ভিতরেও আসবি.!!! (আম্মু)
---আমি কোথায় বাইরে দাড়িয়ে থাকার জন্য বসে আছি.! তুমিই তো আমায় বাসার ভিতরে ডুকতে দিচ্ছো না। আর তুমি ডুকতে না দিলে আমি কি করে ভিতরে যাবো বলো.?(আমি)
এই বলেই আমি বাসার ভিতরে ডুকে গেলাম। তারপর নিজের রুমে ঢুকে আবারও নিজের রুমটা কে দেখতে
লাগলাম। পুরো রুমটাই যেমন রেখে গিয়েছিলাম রুমটা ঠিক তেমন টাই আছে। তবে একটা দিকে লক্ষ করে দেখলাম যে আমার রুমের সব কিছু একদম ঠিক-ঠাক ভাবে গোছানো আছে.। কিন্তু কিভাবে আমি তো আমার রুমটা কখনোই এমন গুছিয়ে রাখতাম না.! তাহলে আমার রুমটা কে গুছিয়ে রেখেছে! পরে আবার ভাবলাম 'হয়তো আম্মুই আমার রুমটা গুছিয়ে রেখেছিলেন আমি যাবার পরে। তাই আমি আর বেশি কিছু না ভেবে ওয়াশরুমে গিয়ে ফ্রেশ হয়ে বিছানায়
নিজের শরীর টাকে এলিয়ে দিলাম।
কেন না আমি ফ্লাইটে জার্নি করে এসে অনেক ক্লান্ত হয়ে গেছি। তারপর হারিয়ে গেলাম ঘুমের রাজ্যে
.
.
.
.
বিকেলে আম্মুর ডাকেই আমার ঘুম ভাঙ্গলো। তারপর উঠে আবারও ফ্রেশ হয়ে আমার রুম থেকে বাইরে বের হয়ে এলাম। বাইরে বের হয়ে এসে দেখি বাসায় অনেক মানুষ। পরে আম্মুর কাছে জিজ্ঞাসা করতেই তিনি বললেন যে আমার ফিরে অাসায় তিনি আমাদের সকল কাজীন দেরকে দাওয়াদ করেছেন। তাই বাসায় এতো মানুষ আর সব আত্মীয় স্বজন।
তাই আমি আর কিছু না বলে নিচে চলে এলাম আমার কাজীন দের সাথে কথা বলার জন্য। আর নিচে এসেই তাদের সাথে হ্যানসেক করতে লাগলাম। আর তারাও আমার সাথে পরিচিতো হতে লাগলো। আর আমার ভালো মন্দ জিজ্ঞাস করতে লাগলো। আর অস্ট্রেলিয়া পড়াশুনো কেমন হয়েছে এবং ইত্যাদি.........
.
.
.
সন্ধ্যায় এবং রাতে অনেক মানুষ জন এবং আরো আত্মীয় স্বজন এলেন। আর এরমধ্যে আব্বুও আমি আসার খবর পেয়ে অফিস থেকে নিয়ে ছুটে চলে আসেন। তারপর আমাকে দেখতে পেয়ে কাঁদতে কাঁদতে জড়িয়ে ধরে আমার সাথে অনেক গুলো কথা বলেন।
তারপর আব্বুর সাথে কথা বলার পরে আমিও রেডি হয়ে নিচে চলে এলাম সবার সাথে দেখা করার জন্য।
(ও হ্যাঁ আপনাদেরকে এটা জানিয়ে রাখি যে এখন আমি আর আগের মতো সেই বকা খ্যাতমার্কা স্টাইলে থাকি না। সেখানে গিয়ে নিজেকে অনেক চেন্জ করেছি। এবং চেন্জ করে ফেলেছি নিজের সব কিছু
এখন আর কেউ আমাকে বকা খ্যাত বলতে পারেনা। এখন আমাকে যেই দেখে তারা সবাই আমার সাথে
নিজে থেকে কথা বলতে আসে। তবে বিশেষ করে মেয়েরা। তারা এখন আমাকে দেখলেই নিজে থেকে আমার সাথে কথা বলতে আসে।)
তো আমি নিচে এসে দেখি যে আমার সব কাজীনরা সবাই চলে এসেছে। আর তাদের মাঝে হঠাৎ দেখলাম যে আম্মুর বান্ধবী মানে রিয়ার আম্মু "আঙ্কেল-আন্টিরাও চলে এসেছেন আর তাদের সাথে রিয়াও আছে।
তবে ওকে দেখে মনে হচ্ছিলো ওর মনটা অনেক খুশী।
যাক আমার এতো বেশী কিছু ভেবে এত কাজ নেই।
তাই আমি এত কিছু না ভেবে তাদের সাথে দেখা
করতে চলে গেলাম। আমি সোজা তাদের সামনে গিয়ে বললাম :-
---আঙ্কেল-আন্টি!!
আসসালামুআলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহু। কেমন আছেন আপনারা?
আমাকে তো ভুলেই গেলেন। আসার পর একটি বারো আমার সাথে দেখাও করলেন না।
---ওয়ালাইকুম আসসালাম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওয়াবারাকাতুহ "বাবা। আমরা সবাই ভালো আছি।
আর আমরা তোমায় ভুলে গেছি নাকি তুমি আমাদের
সবাই কে ভুলে গেছো হ্যাঁ।
সেই যে ৪বছর আগে গেলে আর আমাদের তো তেমন ফোনই করতে না। আমাদের কথা এত তাড়াতাড়ি করে ভুলে গেলে। আর সেখানে গিয়ে তো দেখছি মাশ্আল্লাহ্ অনেক সুন্দর হয়েছো। (আন্টি)
---আন্টি''
আপনাদের সবার কথাই আমার সেখানে সারাক্ষণ মনে পড়তো। কিন্তু আমি চাইলেও যে আর তখন আপনাদের সবার কাছে ছুটে আসতে পারতাম না। আর হ্যাঁ কতোদিন আর ক্ষ্যাতমার্কা হয়ে থাকবো বলুন! তাই সেখানে গিয়ে সময়ের সাথে সাথে নিজেকেও একটু বদলে ফেলেছি আরকি।
এই বলেই আমি এবার রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখলাম। আমি ওর দিকে তাকিয়ে দেখি সে এক নজড়ে আমার
দিকে চেয়ে আছে। হয়তো বা সে আমাকে এভাবে এই রকম ভাবে আশা করেনি। আমি ওর এমন চেয়ে থাকা দেখে ওকে আর কিছু না বলে সেখান থেকে সরে এলাম। সেখান থেকে সরে আসার কিছুক্ষণের মধ্যেই দেখলাম যে রিয়া আমার দিকে আমার সাথে কথা বলার জন্য আমার কাছে মাথা নিচু করে আসছে।
তাই আমিও সেখানেই ওর জন্য দাড়িয়ে রইলাম ওর সাথে কথা বলার জন্য।
রিয়া আমার কাছে আসতেই আমি:-
---হ্যালো মিস রিয়া চৌধুরী। আপনি ভালো আছেন তো।
রিয়া আমার মুখে আপনি কথাটি শুনে আমার দিকে কিছুক্ষণ করুন দৃষ্টিতে তাকালো তারপর বললো:-
---হুম ভালোই আছি। তুমি কেমন আছো।?
তারপর আমি শুরু ওকে কিছু বলতে যাবো ঠিক তখনি আমার কিছু মেয়ে কাজিন রা আমার সাথে কথা বলতে চলে আসে সেখানে।
আর আমি তখন রিয়ার দিকে চেয়ে দেখি সে অনেক রাগি লুক নিয়ে তাদের দিকে তাকাচ্ছে 'আর রাগে ফুলছে। তাই আমিও ওকে আরো বেশি করে রাগানোর জন্য তাদের সাথে আরো বেশী করে হেসে হেসে কথা বলে ওদের সাথে ওদের মোবাইলে সেলফি তুলতে লাগলাম। আর কথা বলতে লাগলাম। এবং এক সময় রিয়াকে আরো রাগানোর জন্য তাদের সাথে রিয়ার ওখান থেকেভরিয়াকে আসছি বলে তাদের সাথে সেখান থেকে চলে এলাম।
আর হঠাৎ আমার এমন ব্যাবহারে রিয়ার কেমন লেগেছে তা জানার জন্য পিছনে তাকাতেই দেখি রিয়ার দুইচক্ষু দিয়েই তখন নিরবে পানি ঝরছে।
সে সেখানেই আমার এমন ব্যাবহারে মনে কষ্ট পেয়ে দাঁড়িযে দাঁড়িয়ে নীরবে কাঁদছে।
হয়তো বা আমার কাছে সে এমন কিছু আশা করেনি।
ধুর আমি এত কিছু না ভেবে আবারও তাদের সাথে মিশতে শুরু করলাম।
কেন না এখন আর আমার রিয়ার চোখের পানির জন্য তেমন মনের মাঝে খুব বেশী একটা কষ্ট হয়না।
এভাবে কিছুক্ষণ চলার পড় রিয়া সেখান থেকে কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে ভিতরে চলে গেলো। আর আমিও তখন তাদের সেখান থেকে এটা ওটা বাহানা দিয়ে সেখান থেকে চলে এলাম।
.
.
.
.
তারপর রাতে অনুষ্ঠান শেষ হলে সবাই এক এক করে বাসায় চলে যেতে থাকে। আর এদিকে আমি আমার রুমে একা একা বসে আছি। হঠাৎ একটু পরেই খেলার করলাম কে যেন আমার রুমের দরজার কাছে এসে দাড়িয়ে রইলো।
আমি তার ছায়াটা রুমের ভিতর থেকেই দেখতে পেলাম।
তাই আমি সাথে সাথেই বললাম:-
--কে ওখানে।
আমার কথাটা বলার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেখান থেকে রিয়া বেরিয়ে এলো আমার সামনে। আমি ওকে দেখে কিছুটা অবাক হয়ে যাই। তারপর:-
--আরে রিয়া ম্যাম আপনি। তাও আবার আমার রুমে।
আপনারা এখনো বাসায় যান নি।
---নাহ্ আসলে আম্মু-আব্বু ওরা সবাই নিচেই বসে আছে আমার জন্য। আমি নিচে গেলেই ওরা আমাকে নিয়ে বাসায় চলে যাবে। কিন্তু আসলে আমি তোমাদের এখানে আসলাম তোমার সাথেবকিছু কথা বলার জন্য।
তোমার কি এখন আমার কথা গুলো শুনার একটু সময় হবে কাব্য? (রিয়া বললো)
--নাহ্ আসলে আমার একটু হালকা কাজ আছে।
তাই আমার হাতে তেমন বেশী সময়ও নেই।
আচ্ছা ঠিক আছে আপনার আমায় কি বলার আছে বলেন। কিন্তু একটু তাড়াতাড়ি করে বলবেন প্লিজ।
আমার কথায় রিয়া আমার দিকে কেমন যেনো একটা করুন দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো।
হয়তো মনে হয় আমার কাছে সে এমন কিছু একটা আশা করেনি।
তারপর আমি লক্ষ করলাম যে ওর চোখের কোণ দিয়ে নীরবে পানি ঝরছে।
তার পর হঠাৎ কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে। তারপর কাঁদতে কাঁদতে আমায় জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় বলতে থাকে:-
part_4
:- আমার কথায় রিয়া আমার দিকে কেমন যেনো একটা করুন দৃষ্টিতে কিছুক্ষণ তাকিয়ে রইলো।
হয়তো মনে হয় আমার কাছে সে এমন কিছু একটা আশা করেনি।
তারপর আমি লক্ষ করলাম যে ওর চোখের কোণ দিয়ে নীরবে পানি ঝরছে।
তার পর হঠাৎ কাঁদতে কাঁদতে দৌড়ে এসে আমায় জড়িয়ে ধরে। তারপর কাঁদতে কাঁদতে আমায় জড়িয়ে ধরে থাকা অবস্থায় বলতে থাকে:-
---I'm Sorry Kabbo.....!! I'm So Sorry..
প্লিজ আমাকে তুমি ক্ষমা করে দেও প্লিজ.! তুমি বিশ্বাস করো তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই আমি আর একটুও ভালো নেই।
:-কেন না তুমি যখন আমার কাছে ছিলে আর যখন সারাক্ষণ ধরে আমার কেয়ার করতে।
সারাক্ষণ যখন আমায় ফোন করে আমার ভালো-মন্দ "আমার খাওয়া না-খাওয়ার কথা জিজ্ঞাসা করতে তখন না আমার তোমার আমার প্রতি এতো কেয়ার টাকে অনেক বিরক্তিকর লাগতো।
তখন আমার নিজেকে তোমার এতো কেয়ার করার মধ্যে কেমন যেনো নিজেকে বন্ধি-বন্ধি লাগতো।
আমার তখন নিজের মনে হতো যে হয়তো তুমি আমাকে সাশনে আবদ্ধ করতে চাচ্ছ।
তাই আমার তখন তোমার দেখানো এতো ভালোবাসা দেখে অনেক রাগ হতো।
তখন আমার মনে হতো যে তুমি আমার প্রতি হয়তো একটু বেশিই জোড় খাটাতে চাচ্ছো।
তাই আমি নিজে থেকেই আর তেমন তোমার সাথে তখন খুব বেশী একটা কথা বলতাম না আর।
তুমি আমায় ফোন দিলেই আমি তখন ইচ্ছে করেই তোমার ফোন তুলতাম না।
আর যখন তুমি আমার ফোনের পর ফোন দিয়েই যেতে
তখন অনেকটা তোমার প্রতি বিরক্ত হয়েই ফোন ধরে তোমার সাথে অনেক বাজে ব্যাবহার করতাম।
তখন আমি তোমার আমার প্রতি এইবভালোবাসাটা বুঝতে পারিনি।
কিন্তু বিশ্বাস করো কাব্য যখন তুমি আমায় ছেড়ে অস্ট্রেলিয়াতে স্টাডি করার জন্য সেখানে চলে যাও আর তার পর থেকেই আমি তোমাকে অনেক মিস'করতে শুরু করি।
মিস'করতে শুরু করি তোমাের আমার প্রতি এতো কেয়ার!! তোমার ফোনে আমার খাওয়া-না খাওয়ার"আমার ভালো-মন্দ গুলোকে জিজ্ঞাসা করার।
আর জানো কাব্য আমি না তুমি চলে যাওয়ার পরেই বুঝেছিলাম যে তোমাকে আমার এই জীবনে কতো খানি দরকার।
তুমি চলে যাওয়ার পরেই বুঝেছিলাম তোমার আমার প্রতি সেই সীমাহীন ভালোবাসাটা।
কিন্তু আমার বুঝতে তখন একটু বেশিই দেড়ি হয়ে গিয়েছিলো।
হয়তো তুমি জানো তুমি চলে যাওযার পর আমি সারাক্ষণ হাতে ফোন নিয়ে বসে থাকতাম শুধুমাত্র এই আশায় যে এই বুঝি তুমি আমায় ফোন করবে।
আর ফোন দিয়ে আমায় জিজ্ঞাসা করবে যে আমি রাতে খেয়েছি কিনা।
কিন্তু নাহ্ তুমি আর আমাকে ফোন করো নি।
তুমি তখন আমার প্রতি তোমার অভিমানটাকেই বসিয়ে রেখেছিলে।
আর জানো তুমি চলে যাওয়ার পর থেকেই প্রতি রাতে আমি তোমার কথা ভেবে না ঘুমিয়ে শুধু কাঁদতাম।
তুমি আমার কাছ থেকে চলে যাওয়ার পর থেকেই আর আমার রাতে ঘুম হয়না। শুধু তোমার কথা ভেবে।
:- প্লিজ কাব্য প্লিজ আমাকে তুমি শেষ বারের মতো করে ক্ষমা করে দেও!!
আমি তোমাকে কথা দিচ্ছি আমি আর কখনই তোমায় আমার প্রতি একটি অভিযোগও তুলতে দেবো না।
কিন্তু প্লিজ "আমাকে শেষ বারের মতো করে ক্ষমা করে দেও প্লিজ!! প্লিজ কাব্য প্লিজ......
:-এই বলেই রিয়া আমাকে আরো শক্ত করে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে লাগলো!!
এদিকে রিয়ার বলা কথা গুলো শুনতে শুনতে কখন যে আমার চক্ষে পানি চলে এসেছে তা আমি নিজেই বুঝতে পারিনি।
তাই তাড়াতাড়ি করে রিয়া দেখার আগেই হাত দিয়ে নিজের চক্ষের পানি গুলো মুছে ফেললাম॥
পরে নিজেকে অনেক শক্ত করে রিয়াকে আমার বুক থেকে ছাড়ালাম॥ তারপর ওকে আমি বললাম:-
--আরে আপনি কিসের কথা বলছেন!!!
আর কিসের জন্য আমার কাছে ক্ষমা চাচ্ছেন বলেন তো আমি তো কিছুই বুঝতেছিনা॥ আর তাছাড়া আপনি আমার কাছে যে সবকিছুর জন্য ক্ষমা চাচ্ছেন তার সবই আমি অনেক আগেই কবে ভুলে গেছি॥ আমার আর ওসবের কিছুই মনে নেই॥
আর আপনি তো আমায় সেদিন খারাপ কিছু বলেন নি॥ আপনি সে দিন ঠিকি বলেছিলেন।
আপনি সেদিন আমাকে আমার স্থানটাও দেখিয়ে দিয়েছিলেন॥
আর আমাকে বুঝিয়ে দিয়ে ছিলেন যে আমার মতো ছেলেরা কখনোই প্রেম করতে পারে না॥
আমাদের মতো আন্-স্মার্ট ছেলেরা কখনোই কারো বয়ফ্রেন্ড হতে পারেনা।
আর আপনি সেদিন আমার সাথে তাই ঠিক কাজটাই করেছেন॥
তাই তো আমি আজকে নিজেকে এতোদূরে নিয়ে আসতে পেরেছি॥
তাই তো সেদিনের পড় থেকেই নিজের মন থেকে ভালোবাসা নামের বস্তুু টাকেই মন থেকে বের করে দিয়েছি॥
আর যানেন এখন না আমার আর কারো জন্য মন আর কাঁদে না।
তবে হ্যাঁ একসময় এই আমার পাগল মনটাই কারো জন্য অনেক কাঁদতো!!
কিন্তুু এখন আমি আমার মনটাকে কাঁদতে কাঁদতে এতো বুঝিয়েছি যে সেও আমার কথা মতো আর কারো জন্য কান্না করা বন্ধ করে দিয়েছে॥
এখন আর আমার বুকের ভিতর কারো জন্য কোনো
অনুভূতি সৃষ্টি হয়না॥
তাই আমি আর আপনাকে আমার পাষান মনের কাছে ফিরিয়ে নিতে পারবো না॥
I'm So Sorry..... আমাকে ক্ষমা করবেন॥
আমি আর আপনাকে আমার জীবনের সাথে জড়াতে পারবো না॥
আর তাছাড়া আমি এমনিতেও আপনার সাথে যায় না!
তার চেয়ে বরং আপনি না হয় আপনার মতো কাউকে খুজে নিন 'যে আপনার সাথে মানাবে॥
কিন্তুু আমি আর পারবো না 'আমাকে ক্ষমা করবেন॥এই বলেই আমি আমার রুম থেকে বাইরে বের হয়ে ছাদে চলে এলাম॥
কেন না আর কিছুক্ষণ যদি আমি ওর সামনে দাঁড়িয়ে থাকতাম তাহলে আমি আর নিজেকে ওর সামনে ধরে রাখতে পারতাম না॥
তবে আসার সময় রিয়ার দিকে হালকা লক্ষ করে দেখেছিলাম যে সে ওর মাথা নিচু করে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে।
.
.
.
ছাদে এসে কিছুক্ষণ পর নিচে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া ও আঙ্কেল-আন্টি তারা সবাই বাসায় চলে যাচ্ছে। তাই আমি আর তাদের দিকে না তাকিয়ে আবারো আমার রুমে চলে এলাম.!! আর এসেই ঘুমিয়ে পড়লাম।
সকালে আম্মু এসে আমায় ডাক দিয়ে আমার ঘুম ভাঙ্গিয়ে যান॥
তাই আমিও উঠে আগে ফ্রেশ হয়ে নিচে চলে এলাম
সকালের নাস্তা করার জন্য। নিচে এসে দেখিযে আব্বু-আম্মু ওরা সবাই আমার জন্য নাস্তার টেবিলে বসে আছে। তাই তাড়াতাড়ি করে নিচে এসে আগে নাস্তার টেবিলে বসে পড়লাম। আমি নাস্তা করতে করতে হঠাৎ আম্মু বলে উঠেন যে:-
--"বাবা" কাব্য। তুই আজ একটু নাস্তা করার পড় এখন স্টেশনে যাসতো আব্বু আমার।
কেন না তোর বড় খালার মেয়ে নীলা আজকে আমাদের বাসায় আসছে। তাই তুই একটু বাসায় একা একা বসে না থেকে ওকে স্টেশন থেকে নিয়ে আসিস বাবা আমার ঠিক আছে (আম্মু)
-- হুমম্ 'আচ্ছা ঠিক আছে আমি গিয়ে নীলাকে স্টেশন থেকে বাসায় নিয়ে আসবো।
--ঠিক আছে বাবা.!!
তারপর আমি আর তাদের কিছু না বলে নাস্তা করে সোজা স্টেশনের দিকে চলে গেলাম।
আর আমি স্টেশনে পৌঁছেই দেখি যে আমার বড় খালার মেয়ে নীলা আগে থেকেই এসে বসে আছে।
তাই আমি আর সেখানে দাভড়িয়ে না থেকে সোজা ওর
কাছে চলে গেলাম। আমাকে ও দেখার সাথে সাথেই দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরলো।
(ও আপনাদের তো বলাই হলো না যে এই মেয়ের আবার আমার গায়ে পড়ে কথা বলার অভ্যাস আছে)
তারপর আমি ওকে অনেক কষ্টে নিজের কাছ থেকে ছাড়িয়ে বললাম:-
--কি'রে নীলা তুই তো দেখি অনেক বড় হয়ে গেছিস ..।
তুকে তো এখন আর চেনাই যায়না। তুই কখন এসেছিস। আর আমাকেই বা কিভাবে চিনলি।
--আমি তোমায় আন্টির ফোনে ছবিতে দেখেছিলাম
আর আমি সেই কখন থেকে এখানে এসে দাড়িয়ে আছি সেটা কি তুমি জানো??
--স্যরি' রে তুকে দাড় করিয়ে রাখার জন্য। আচ্ছা চল
এখন বাসায় যাই "তারপর পরে না হয় তোর সাথে বাসায় গিয়ে কথা বলবো।
এই বলেই আমি নীলাকে নিয়ে আমার বাইকের পিছনে বসতে বললাম। কেন না সে নাকি আমার সাথে যাওয়ার জন্য আগে থেকেই ওর সব কাপড় "লাকেজ আগে থেকেই আমাদের বাসায় পাঠিয়ে দিয়েছিলো।
তারপর নীলা আমার বাইকের পিছনে বসলেই আমি আমার বাইক টা স্টার্ট করে বাসার দিকে আসতে থাকি।
কিন্তুু হঠাৎ নীলা বললো কাব্য বাইক থামাও..!!
বাইক থামাও বলে জোড়ে জোড়ে চিত্কার শুরু করে॥
তাই আমি সাথে সাথেই সেখানে রাস্তার একপাশে একটা ফুচকার দোকানের সামনে বাইকটা থামাই॥
আমার বাইক থামানোর সাথে সাথেই নীলা আমার হাত ধরে টানতে টানতে বলতে লাগলো যে সে নাকি এখন ফুচকা খাবে॥ আমি ওকে না করার সত্ত্বেও আমার কথা না শুনে জোড় করে ফুচকা ওয়ালা কে দুই প্লেট ফুচকা বানাতে বললো॥ এদিকে আমার অনিচ্ছা থাকা সত্ত্বেও ওর সাথে ফুচকা খেতে এবং ওর সাথে আমাকে বসতে হলো॥
নীলার সাথে ফুচকা খেতে খেতে হঠাৎ করেই নীলা আমাকে একবার ওর হাত দিয়ে ফুচকা খাওয়াবে এই বলেই সে আমার দিকে একটা ফুচকা হাতে নিয়ে আমার মুখের কাছে নিয়ে আসে॥
আমি খাবোনা বলে অন্য দিকে মুখ ফিরে তাকাতেই আমার চক্ষুচড়কগাছ॥
কেন না আমি সেদিকে তাকাতেই দেখলাম যে রিয়া সেখানে আমার আর নীলার দিকে একটা রাগি মুড দিয়ে নীরবে চখের কোন দিয়ে হালকা পানি আটকে রেখেছে।
রিয়াকে দেখে মনে হয় সে আমার সাথে এখানে নীলাকে আশা করেনি।
তাই আমিও ওকে রাগানোর জন্য ওকে দেখিয়ে দেখিয়ে নীলার হাতে ফুচকা খেতে থাকলাম।
পরে রিয়াকে আরও রাগানোর জন্য আমি নিজের হাতে একটা ফুচকা তুলে নীলার মুখের কাছে নিয়ে এলাম॥ "আর নীলাও আমার হাতে ওকে খাওয়ানোর জন্য ফুচকা দেখে সাথে সাথেই তা নিজের মুখে পুরে নেয়॥
এদিকে আমি আড় চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে এবার আমার দিকে অনেক আহতো চোখে তাকিয়ে সমানে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥
তাই আমি তখন ওকে দেখে বলি:-
--আরে রিয়া আপনি এখানে!!
ফুচকা খেতে এসেছেন নাকী? তা আপনি একা কেন? আপনার সাথে কেউ নেই॥
আসুন আসুন আমাদের সাথে বসে একসাথে ফুচকা খাবেন॥(আমি)
--আরে তুমি রিয়া আপু না!!
হ্যাঁ 'হ্যাঁ তুমি তো রিয়া আপুই। আরে আপু কেমন আছেন আপনি? আর একা এখানে দাঁড়িয়ে আছেন কেন? আসুন আসুন আমাদের সাথে বসে একসাথে ফুচকা খাই 'আসুন প্লিজ। (নীলা বললো)
--ধন্যবাদ তোমাদের।
কিন্তুু আমার না এখন একটু জরুরী কাজ বাকী আছে তাই আজ আর তোমার সাথে বসে ফুচকা খেতে পারলাম না। তবে হ্যাঁ অন্য আরেক দিন তোমার সাথে বসে ফুচকা খাবো তোমাকে কথা দিলাম। আচ্ছা তার আগে তুমি আমায় এটা বলো তো যে তুমি কাব্যর কে হও?
তোমাকে তো আমি এর আগে ওর সাথে কখনো দেখিনি? (রিয়া বললো নীলাকে)
--আরে আপু আপনি আমায় চিনবেন না। আমি হলামম....!!!!
নীলাকে ওর কথা শেষ করার আগেই ওর মুখে একটা ফুচকা ডুকিয়ে দিলাম॥ তারপর আমি রিয়াকে বললাম:-
--আরে আপনি ওকে চিনবেন না॥বআমি আপনাকে সেদিন একজনের কথা বলেছিলাম না। এই হলো সে।যার কথা আমি গতকালকে আপনাকে বলেছিলাম।
--এর মানে কী কাব্য 'আমি তোমার কথার কিছুই বুঝলাম না..!!!
এই মেয়েটা তোমার কে হয়? ভালো করে বলো আমায়
(কথাটা একটু রেগেই বললো রিয়া)
আর রিয়ার এমন রাগি মুড দেখে আমি আর সেখানে না থেকে সাথে সাথেই বলে উঠলাম:-
--আচ্ছা আমরা এখন উঠি 'আমাদের আবার বাসায় যেতে হবে। আপনার সাথে না হয় অন্য কোন দিন কথা হবে আশি কেমন। এই নীলা চলো আমরা বাসায় যাই। এই বলে আমি তখন নীলার হাত ধরে রিয়ার সামনে ওকে নিয়ে গিয়ে আমার বাইকে উঠতে বললাম॥
আর নীলাও সাথে সাথে আমার বাইকে উঠে পড়লো।
নীলা আমার বাইকে উঠার পর আমি এবার ওকে আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরতে বললাম।
কেন না আমি তখন আড় চোখে রিয়ার দিকে তাকিয়ে দেখি সে আমাদের দিকে অনেক রাগি লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে॥
তারপর নীলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরার পড় আমি বাইক স্টার্ট করে রিয়ার সামনে দিয়ে চলে আসলাম।
আর আসার সময় বাইকের লুকিংগ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া তখনও এক নজড়ে আমাদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥আমার তখন ওর চোখের পানি দেখে হঠাৎ করে বুকের বাম পাশটাই কেনো জানি ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করলাম॥
ওর কান্না দেখে কেনো জানি আমারও চোখের কোণে পানি চলে এসেছিলো॥
কিন্তুু সেটা রিয়াকে বুঝতে দেইনি..॥
.
part_5_last
.
:- তারপর নীলা আমাকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরার পড় আমি বাইক স্টার্ট করে রিয়ার সামনে দিয়ে চলে আসলাম।
আর আসার সময় বাইকের লুকিংগ্লাসে তাকিয়ে দেখলাম যে রিয়া তখনও এক নজড়ে আমাদের চলে যাওয়ার দিকে তাকিয়ে নীরবে চোখের পানি ঝরাচ্ছে॥আমার তখন ওর চোখের পানি দেখে হঠাৎ করে বুকের বাম পাশটাই কেনো জানি ব্যাথা অনুভব করতে শুরু করলাম॥
ওর কান্না দেখে কেনো জানি আমারও চোখের কোণে পানি চলে এসেছিলো॥ কিন্তুু সেটা রিয়াকে বুঝতে দেইনি॥
এরপর বাষায় চলে আসলাম বাসায় এসে নীলাকে নামতে বললাম॥
তারপর ওকে জিজ্ঞাসা করলাম যে সে রিয়াকে কিভাবে চিনলো?
আর সে আমার প্রশ্নের জবাবে বললো "সে নাকি রিয়ার
ছবি একবার আমার রুমে একটা ডায়েরীর ভিতরে দেখেছিলো॥
আর সে এও বললো যে"সে নাকি আমার আর রিয়ার সম্পর্কের কথা টাও যানে॥
তাই আমি আর বেশী কিছু জিজ্ঞাসা না করে ওকে বাসার ভিতরে যেতে বললাম॥
আর আমি বলার সাথে সাথেই নীলা বাসার ভিতরে ঢুকে গেলো॥
আর ভিতরে ঢুকেই আগে আম্মুকে খালা আম্মু বলে জড়িয়ে ধরলো॥ তারপর বললো:-
--খালা আম্মু কেমন আছো তুমি!!! ছোট আম্মু কেমন আছে!! আর তুমি তো আমাকে ভুকেই গেলে॥
একটি বার আমায় ফোন দিয়ে আমার খবরও নিলে না তুমি॥ (নীলা)
--আলহামদুলিল্লাহ্ আমরা সবাই ভালো আছি॥
(আর তুই কি জানি বলছিলি নীলার কান ধরে)
আমরা তকে ভুলে গেছি তাই না॥ আমরা ভুলে গেছি
নাকি তুই আমাদের সবাই কে ভুলে গেছিস॥
একটি বার তুই তো আমাকে ফোন দিয়ে আমার খরব নিলি না॥ আর এখন এসে উল্টো আমাকে দোষারোপ করছিস তাই না। (আম্মু)
--আউ্ ' আউ্ ' খালা আম্মু কান ছাড়ো প্লিজ আমার প্লিজ॥ আচ্ছা আমি মানছি আমারি দোষ॥ আমিই তোমাদের খবর নেই নি॥ প্লিজ এখন তো আমার কান ছাড়ো প্লিজ॥(নীলা)
আম্মু তখন নীলার কান ছেড়ে দেয়॥ তারপড় তারা আরো কিছুক্ষণ কথা বলে নীলা ফ্রেশ হতে ওয়াশরুমে চলে গেলে আমি আম্মুর সাথে অল্প কিছু কথা বলে আমার রুমে চলে গেলাম॥ তারপর রিয়ার কথা গুলো ভাবতে লাগলাম॥
সে আজ হয়তো নীলাকে আমার সাথে দেখে অনেক কষ্ট পেয়েছে। আর তখন আমার এমন ব্যাবহারেও হয়তো কষ্ট পেয়েছে মনে॥
কিন্তুু এতে আমার কিছু করার নেই। এক সময় আমিও ওর জন্য অনেক কেঁদে ছিলাম। কিন্তুু সে তো আমার কষ্ট টাকে বুঝেনি তখন॥ তাহলে আমি কেন এখন এতো তাড়া-তাড়ি ওকে ক্ষমা করে দেবো॥
আমিও ওকে বুঝাবো কারো ভালোবাসা নিয়ে অবোহেলা করলে তখন কেমন কষ্ট লাগে॥ ঠিক যেমন এখন সে আমার অবোহেলায় কষ্ট পাচ্ছে॥ তবে ওকে এমন কষ্ট পেতে দেখে আমিও যে ঠিক থাকতে পারছি না। আর আমারও যে খারাপ লাগছে না তা কিন্তুু না । ওকে এমন কষ্ট পেতে দেখে আমিও মনে মনে অনেক কষ্ট পাচ্ছি॥ কিন্তু……………
.
.
.
এমন ভাবেই কেটে যায় কিছুদিন। তো একদিন আমি আমার রুমে বসে কি যেনো একটা কাজ করছিলাম' আর তখনি হঠাৎ টেবিলে রাখা আমার ফোনটা বেজে উঠলো॥ তাই আমি কাজ বাদ দিয়ে আগে ফোনটা ধরতে গেলাম॥ আর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখি রিয়ার আম্মু আমায় ফোন করেছেন। তাই তাড়া-তাড়ি করে ফোন টা ধরে আগে তাকে সালাম দিলাম॥ তারপর:-
আমি:- আস্সালামুয়াইকুম' আন্টি..॥
--আসসালামু আলাইকুম ওয়ারাহমাতুল্লাহি ওবারাকাতুহু। (আমি)
--ওয়ালাইকুম'সালাম বাবা॥ বাবা কাব্য তুমি কোথায়
আছো এখন!!!
(কথা গুলো অনেকটা কান্নার সুরে বললেন আন্টি)
--আন্টি আমি এখন বাসায় আছি॥ কিন্তুু কেন কি হয়েছে? আর আপনার কন্ঠশ্বর এমন শুনাচ্ছে কেন?
--কাব্য বাবা এত কথা বলার সময় নাই তুমি কি এখন একটু হাসপাতালে আসতে পারবে?
---হাসপাতাল!!
'"হঠাৎ হাসপাতালে কেন যেতে বলছেন আন্টি। সব কিছু ঠিক আছে তো!! আর আপনার গলা টা এমন কেন কাঁদার মতো কেন মনে হচ্ছে!!! সব কিছু ঠিক আছে তো॥ প্লিজ আন্টি আমাকে সব কিছু খুলে বলুন॥
--নাহ্ বাবা কাব্য কিছুই ঠিক নেই॥
আর তোমাকে আমি এই জন্য হাসপাতালে আসতে বলছি। রিয়াকে আজকে আমরা হাসপাতালে ভর্তি করালাম।
--কিহ্ বলছেন আন্টি আপনি।
হঠাৎ করে রিয়াকে কেনো হাসপাতালে ভর্তি করালেন? আর রিয়ার কি হয়েছে? ও ঠিক আছে তো॥
--বাবা "রিয়ার অবস্থা তেমন একটা ভালো না॥
মেয়েটা আজ থেকে প্রায় এক সপ্তাহ ধরে ঠিক মতো খাওয়া দাওয়া করতো না॥ আর সারাক্ষণ শুধু নিজের রুমের দরজা বন্ধ করে কান্না করতো॥ আমি ওকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে আমাকেও কিছু না বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে শুধু কান্না করতো অার বলতো যে 'আম্মু আমাকে আর একটি বার ক্ষমা করা যায় না। আমি কি এতোটাই ক্ষমার অযোগ্য? এসব বলেই শুধু সারাক্ষণ আমাকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতো। আর আমিও ওর কথার কিছুই বুঝতাম না॥ কিন্তুু আজ হঠাৎ করে সকাল থেকে রিয়া ওর রুমের দরজা খুলছিলো না॥ আমি ওকে অনেক বার ডেকে আসি কিন্তুু ভিতর থেকে ওর কোন আওয়াজি পাওয়া যাচ্ছিলো না॥ তাই আমি পরে তারা-তারি করে তোমার আঙ্কেল কে নিয়ে ওর
রুমের দরজা ভেঙে ভিতরে ঢুকে দেখি রিয়া বিছানায় পরে আছে॥ কিন্তুু আমি পরোক্ষণে আবার আরেকটু ভালো করে লক্ষ করে দেখি যে ওর হাত দিয়ে তখন রক্ত গড়িয়ে পরছিলো॥ তাই সাথে সাথে ওর হাত টা ঘু্রিয়ে দেখি যে ওর হাতের অনেক খানি কাটা॥ তখন আমরা আমি আর তোমার আঙ্কেল সাথে সাথেই রিয়াকে নিয়ে হাসপাতালে চলে আসি॥ আর হাসপাতালে নিয়ে এলে ডাক্তার আমাদের বলে রিয়ার
শরীরের অবস্থা খুব একটা ভালো নয়॥ ওর শরীর দিয়ে নাকি অনেক রক্ত বেরিয়ে গেছে তাই এখন নাকি ওরা sure"ভাবে আমাদের কিছু বলতে পারবেন না ৬ ঘন্টা না যাওয়ার আগে॥
আর জানো বাবা মেয়েটাকে এখানে আনার পড় সে শুধু তোমার নাম নিয়ে মাঝে মাঝে চিত্কার দিয়ে জ্ঞান হারিয়ে ফেলছিলো তাই আমি এখন সে কারনেই তোমাকে ফোন দিলাম॥ আচ্ছা বাবা তুমি কি একটি বার হাসপাতালে আমার মেয়েটাকে বাচানোর জন্য হলেও আসবে বাবা প্লিজ? কেন-না আমার মনে হয় তুমি যদি এখন ওর পাশে না থাকো তাহলে হয়তো আমার মেয়েটা আর বাঁচবে না বাবা॥
(এই বলেই আন্টি আবারো ফোনে কাঁদতে শুরু করলেন)
এদিকে আন্টির কথা শুনে আমার তখন মনে হচ্ছিল যে কেউ যেনো আমার বুকে ছুরি চালিয়ে দিয়েছে॥ আমার যেন তখন আর মুখ দিয়ে কথা বের হচ্ছিল না আর॥
আমি নিজেকে কোন রকমে শান্ত রেখে আন্টিকে বললাম আমি আসছি। আর এটা বলেই ফোন রেখেদিলাম॥
ফোনটা কাটার পরে আমার চলার শক্তিটাও মনে হচ্ছিল আমার আর নেই॥ আমি বাসায় কাউকে কিছু না বলেই আগে সোজা হাসপাতালের দিকে ছুটলাম॥ আর আমার হাসপাতালে পৌঁছাতে ১৫ মিনিটের মতো সময় লাগলো॥ তবে তখন আমার কাছে এই ১৫ মিনিট প্রায় ১৫ দিনের মতো মনে হচ্ছিল॥ বারে বার শুধু রিয়ার কথা মনে হচ্ছিল॥ ওর এমন অবস্থার জন্য হয়তো আমিই নিজে দাই॥ ওর কিছু হয়ে গেলে হয়তো আমি আর নিজেকে কখনোই ক্ষমা করতে পারবো না॥
আমিও নিজেকে শেষ করে দেবো...এই সব কথা ভাবতে ভাবতে আমি হাসপাতালে চলে আসলাম॥ সেখানে গিয়ে আগে রিয়াকে কোন ওয়ার্ডে
ভর্তি করানো হয়েছে সেটা জেনে নিলাম॥ তারপর রিয়া যেখানে আছে সেখানে আগে ছুটতে লাগলাম॥ সেখানে গিয়ে দেখলাম যে আন্টি বাইরে ডাক্তারের সাথে কি যানি কথা বলছে আর আমাকে দেখার সাথে সাথেই আন্টি আমাকে জড়িয়ে ধরে বাচ্চাদের মতো কান্না করতে করতে বললেন যে :-
--বাবা "কাব্য তুমি এসেছো!
বাবা আমার মেয়েটার অবস্থা বেশী ভালো না।
আচ্ছা বাবা আমার মেয়েটা বাঁচবে তো!!
সে ছাড়া এই দুনিয়ায় আমাদের আগলে ধরে বেঁচে থাকার কেউ নেই বাবা॥ আমার মেয়েটা আবার বাঁচবে তো বাবা!! বলোনা বাবা কাব্য আমার মেয়েটা আবার বাঁচবে তো??
আন্টির কথা গুলো শুনে আমি আর নিজেকে ধরে রাখতে পারলাম না॥ আমিও আন্টির সাথে চোখেত বাধ ছেড়ে দিলাম। তারপর কান্না করতে করতে আমি বললাম:-
--নাহ্ আন্টি রিয়ার কিছুই হবে না॥ আমি ওর কিছুই হতে দিবো না॥ ওর কিছু হয়ে গেলে আমিও যে আর বেঁচে থাকতে পারবো না॥ তাই আমার জন্য হলেও ওকে আবারও বাঁচতে হবে॥ দেখবেন রিয়া ঠিক হয়ে যাবে॥ কেন-না আমি এসে গেছি ওর কাছে॥
সে এখন আর আমার কথা ফেলতে পারবে না॥
দেখো ওর কিছুই হবে না!!বওর কিছুই হবেনা........
এই বলেই আমিও আন্টিকে জড়িয়ে ধরে হাউমাউ করে কাঁদতে লাগলাম॥
তারপর আন্টির সাথে আরো কিছু কথা বলে বাইরের গ্লাস দিয়ে রিয়াকেভদেখতে লাগলাম॥ আর রিয়াকে তখন এই অবস্থায় দেখে আমার চোখের পানি যেন আরো বেশি করে ঝরতে লাগলো॥ কেন-না মেয়েটার পুরো শরীর টাই না খেয়ে' না ঘুমিয়ে ' একদম শুকিয়ে কাঠ করে ফেলেছে॥ চোখের নিচে কালি পড়ে গেছে॥ আর হাতে অনেক বড় ধরনের ব্যান্ডিজ।
ওর এসব দেখে আমি আর নিজেকে সামলে রাখতে পারছিলাম না॥ বার বার শুধু আমার এটাই মনে হচ্ছিলো যে ওর এমন অবস্থার জন্য আমিই নিজেই দাই॥ আমি এসব কথা ভাবছিলাম আর কাঁদছিলাম। আর ঠিক তখনি একজন ডাক্তার এসে বলতে লাগলো:-
--শুনুন আপনাদের আর চিন্তা করতে হবেনা॥
আল্লাহ 'র রহমতে এবারের মতো আপনাদের মেয়ে বেচে গেছে॥ ওর আর কিছুক্ষণের মধ্যেই জ্ঞান ফিরবে আপনারা চাইলে তখন গিয়ে ওর সাথে দেখা করতে পারবেন॥ তবে একটা ব্যাপার মনে রাখবেন এমন কিছু আবার হলে নেক্সট টাইম আমরা আর হয়তো কিছুই করতে পারবো না॥ তাই "বি 'কেয়ার' ফুল"॥ এই বলেই ডাক্তার সাহেব চলে গেলেন॥
এদিকে ডাক্তারের কথা শুনে খুশিতে আমি আঙ্কেল-আন্টি আবারো কান্না শুরু করে দিয়েছি॥
আর হ্যাঁ সেটা একটা সুখের কান্না॥
কিছুক্ষণ আগে তুবার জ্ঞান ফিরেছে॥
তাই আঙ্কেল-আন্টি আগে গেলেন তাদের মেয়ের সাথে দেখা করতে॥ এদিকে আমিও বাসায় ফোন করে রিয়ার কথা বলে দিয়েছি''আর কিছুক্ষণ পরেই আম্মু আর নীলা হাসপাতালে চলে আসে॥ তাই আমি আর ভিতরে না গিয়ে বাইরেই তাদের সাথে দাড়িয়ে রইলাম॥
আঙ্কেল-আন্টি রিয়ার সাথে দেখা করার পর আমাকে ভিতরে যেতে বললেন॥ কেন-না রিয়া নাকি আমায় ডাকছে। তাই অামি আর এক মুহূর্ত বাইরে দাড়িয়ে না থেকে সোজা ওর কাছে চলে গেলাম॥ ওর কাছে গিয়ে ওর মাথার কাছে দাড়িয়ে রইলাম। আর সে আমাকে আসতে দেখে আমার প্রতি অভিমান করে অন্য দিকে মুখ ঘুরিয়ে রাখলো॥ তাই আমি আগে ওর কাছে বসে আমার দিকে মুখ করে তাকাতে বললাম।:-
--তুমি এখানে কেন এসেছো.!!! আমি বেচে আছি নাকি
মারা গেছি তা দেখতে!! তবে তুমি চিন্তা করো না আমি এবারের মতো বেচে গেলেও এর পরের বার আমার মুখ আর তোমায় দেখতে হবে না আমি তোমায় কথা দিচ্ছিইইই..
(ঠাসসসস) ওর কথা শেষ করার আগেই রিয়া আবারো মরার কথা শুনে নিজের রাগটাকে আর সামলে রাখতে পারলাম না॥ তাই ওর কথা শেষ করার আগেই ওর গালে( ঠাসসস ) করে একটা থাপ্পড় বসিয়ে দিলাম॥ আর ওকে থাপ্পড় মারার সাথে সাথে সে চোখের পানি ছেড়ে দিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে রইলো।
--আর একবারও যদি তুমি মরার কথা বলনা তাহলে আমি নিজেই তোমার আগে নিজেকে শেষ করে দেবো॥ আমার আর এতো কষ্ট সহ্য হচ্ছে না॥
কি করে পারলে তুমি এই কাজ টা করতে! কি করে পারলে একাই এতো বড় একটা সীদ্ধান্ত নিতে!
আমার কথা কি তোমার একটি বারোও মনে পড়েনি। একটি বারো কি তোমার এটা মনে হয়নি যে তোমার কিছু হয়ে গেলে আমার কি হবে॥
আমি তোমাকে ছাড়া কিভাবে বেচে থাকতাম রিয়া॥ কি নিয়ে বাচতাম আমি॥
নাহ্ তোমার সেসব কিছুই মনে পড়েনি|
আর তোমার মনে পড়বে কেনো! আসলে তুমি তো আমায় কখনো ভালোই বাসো নি॥ আমায় যদি তুমি সত্যি ভালোবাসতে তাহলে তুমি কখনই এই কাজ টা করতে পারতে না॥ এই বলেই আমি ওর হাতটা ধরে কাঁদতে শুরু করলাম॥
এদিকে আমার কথা শুনে রিয়া আরো কান্না শুরু করে দিলো॥ তারপর বললো :-
--তো 'এমন করবো না তো কি করবো!! তুমি তো নাকি আমাকে আর ভালোই বাসতে পারবে না। আমাকে নাকি আর একটিবার ক্ষমাই করতে পারবে না। তার উপর তুমি আবার আমার সামনে অন্য একটা মেয়েকে নিয়ে ঘুরে বেড়াবে তা দেখেও আমি কেন আর এমন কাজ করবো না। আর তুমি এখানে কেন এসেছো যাও তোমার সেই নতুন প্রমিকার কাছে যাও' আমার কাছে কেন এসেছো! যাও তোমার সেই প্রমিকার কাছে যাও॥ যাকে আদর করে নিজের হাতে ফুচকা খাইয়ে দিয়ে বাইকে করে ঘুরে বেড়াচ্ছিলে যাও ' যাও তার কাছেই যাও॥ আমার কাছে কেন এসেছো তুমি এখন যাও ওর কাছে যাও॥
এই বলেই রিয়া আবারো কাঁদতে কাঁদতে আমার উপরে অভিমান করে অন্য দিকে নিজের মুখ গুরিয়ে রাখলো॥
--আরে দেখো আমি তোমার সাথে যা করেছি একদম ঠিক করেছি। তুমি কি আমায় সেদিন কম কষ্ট দিয়েছিলে! তোমার ব্যাবহারে আমার সেদিন খারাপ লাগেনি॥ আর জানো তুমি তোমার বলা সেদিন কার কথা গুলোতে আমায় কত খানি কষ্ট দিয়েছিলো?
নাহ্ তুমি সেদিন আমার কষ্ট টাকে বুঝোনি॥
তাই আমিও তোমার উপরে অভিমান করে তোমার সাথে একোদিন খারাপ ব্যাবহার করেছি॥
আর থাকলো নীলার কথা। তুমি জানো নীলা আমার কে হয়?
আরে নীলা আমার বড় খালার মেয়ে॥ তুমি যে সে দিন আমাকে আর নীলাকে একসাথে দেখেছিলে।
সে দিন আমি নীলাকে স্টেশন থেকে আমাদের বাসায় আনতে গেছিলাম॥ আর ওকে সেদিন আমি তোমায় দেখার পর তোমাকে রাগানোর জন্য ইচ্ছে করেই ওকে আমি নিজের হাতে তুলে ফুচকা খাইয়ে দিচ্ছিলাম॥
যাতে তুমি আমাকে ওর সাথে দেখে অনেক রেগে যাও' আর তুমি সেদিন অনেক রেগেও গেছিলে॥
কিন্তু এখন সত্যি টা বলার পরেও যদি তুমি আমার সাথে অভিমান করে কথা না বলো তাহলে আমার আর কিছুই করার নাই।
আমি নাহয় এখন এখন নীলার কাছেই ফিরে যাই' মেয়েটা আবার আমাকে অনেক লাইক করে
কি বলো॥
আচ্ছা তুমি থাকো তোমার অভিমান নিয়ে আমি এখন নীলার কাছে গেলাম॥
এই বলে আমি শুধু রিয়ার কাছ থেকে উঠতে যাবো ঠিক তখনি সে ঝড়ের গতিতে আমার দিকে ফিরে আমার শার্টের কলারটা চেপে ধরে॥ তারপর বলে:-
--কি বললি তুই !!
তোর সাহস আগের চেয়ে অনেক বেড়ে গেছে তাই না?
তোর সাহস থাকলে এখান থেকে এক পা সামনে বাড়িয়ে দেখা দেখি॥ তখন দেখবি তোর আমি কি অবস্থা করি। আর তুই যদি এখান থেকে একপা সামনে বাড়াস না তাহলে তকে এখান থেকে সোজা হাসপাতালের ছাঁদে নিয়ে যাবো॥ তারপর সেখান থেকে সোজা নিচে ফেলে দিবো বলে দিলাম॥
এতো দিন তুই আমায় অনেক কষ্ট দিয়েছিস এবার আর তোকে ছাড়বো না॥ মগের-মুলুক পেয়েছিস তাই না তোর দেয়া কষ্ট সহ্য করবো আমি' আর কোথাকার কোন "নীলা না টিনা" এসে তোকে আমার কাছ থেকে কেড়ে নেবে.। বললেই হলো তাই না॥
আর ওকে যদি তোর সাথে আর দেখি না তাহলে দেখবি আমি ওর কি হাল করি॥ আমার মনের মানুষের সাথে ওর লুতুফুতু করার শখ বের করবো॥
আর আমি যদি আবার তোকেও ওর ধারের কাছেও দেখী না সেদিন তোর দুনিয়ার শেষ দিন করে ছাড়বো দেখবি॥ এখন চুপচাপ আমায় জড়িয়ে ধরে আমার পাশে শুয়ে থাকবি তারপর এখান থেকে সোজা কাজী অফিসে গিয়ে আমায় বিয়ে করবি॥
কেন-না তকে বা তোর ওই বড় খালার মেয়ে নীলাকে."কারো উপরে এখন আমার ভরসা নেই॥
তাই তুকে আর ছাড়ছি না॥
অাগে শুধু একবার বিয়েটা করে নেই তারপর তোকে আমি জিনিস তা বুঝাবো॥ এখন চুপচাপ আমায় জড়িয়ে ধর॥
.
.
.
এদিকে আমি রিয়ার মুখে হঠাৎ তুই তুকারী শুনে আর ওর এমন গুন্ডীর মতো ব্যাবহার দেখে ওর আগের পুরোনো সব ব্যাবহারের কথা মনে পড়ে গেলো॥
মেয়েটা আগে আমায় অনেক শাস্তি দিতো। আমি কোন ভুল করলে শাস্তি তো দিতোই সাথে তুই তুকারী তো ফ্রি আছেই॥ তাই আমি আর ওকে ভয়ে কিছু না বলে চুপচাপ ওর পাশে গিয়ে ওকে আমার বুকের মাঝে জড়িয়ে ধরলাম॥
আর সেও আমাকে জড়িয়ে ধরাতে দুজন কিছুক্ষণের মধ্যেই শান্ত হয়ে গেলাম॥ তারপর আমি বললাম:-
--এই রিয়া।
--হুম বলো।
--আমি বলছিলাম কি আমার না এখন মিষ্টি খেতে খুব ইচ্ছে করছে॥ আমায় কি একটু মিষ্টি খেতে দেবে?
--হুম বুঝলাম॥
আচ্ছা ঠিক আছে এখানে তো আর মিষ্টি নেই তুমি বরং আব্বুকে ডাকো॥ আমি আব্বুকে বলে বাজার থেকে মিষ্টি কিনে আনছি। দাও আব্বুকে ডাক দাও॥
--আরে এর মাঝে আবার আঙ্কেল কে ডাকার কি দরকার॥ তার শরীর এমনিতেই ভালো নেই। তাই তাকে অযথা এখানে মিষ্টি থাকা সত্ত্বেও কেন বাইরে বাজারে মিষ্টি আনতে পাঠাবে বলো' তার চেয়ে বরং তুমি আমায় তোমার মিষ্টি গুলো খেতে দিলে ভালো হয় না॥
--কিন্তুু এখানে তো আমার কাছে সত্যিই কোনো মিষ্টি নেই॥ তাহলে তুমি খাবে কি? (রিয়া)
--কেন আছে তো তোমার ওই মিষ্টি ঠোঁট দুটো॥
ওগুলো থাকতে আবার বাজারে মিষ্টি কিনতে যেতে হতে কেনো॥
আমার এই কথাটা বলার সাথে সাথে রিয়া আমার দিকে কেমন যানি একটা রাগি লুক দিলো॥
তারপর আমাকে বললো:-
--তোমার তো সাহস কম নয়॥ তুমি এখন এসবের কিছুই আমার কাছে বিয়ের আগে পাবে না॥
আগে আমাকে বিয়ে করো তারপর নাহয় ভেবে দেখা যাবে॥ কিন্তুু তার আগে আর একটি বারো যদি তুমি আমার কাছে আর উল্টো-পাল্টা কিছু বলছো তো তোমার খবর আছে বলে দিলাম॥ (রিয়া)
--ওকে' আমি আর তোমার কাছে কিছু চাইবো না॥ আমার এখন থেকে যা চাওয়ার আছে এখন থেকে সব আমি নীলার কাছে গিয়ে চাইবো॥
আর আমি জানি সে আমার চাওয়া কখনোই অপূর্ণ রাখবে না॥ আচ্ছা তুমি এখনে শুয়ে থাকো আমি নাহয় একটু নীলার কাছ থেকে মিষ্টি খেয়ে আসিইইইই ......॥
তারপর আমি আর আমার কথাটা শেষ করতে পারলাম না তার আগেই রিয়া ওর দুটো মিষ্টি ঠোঁট দিয়ে আমার মুখ বন্ধ করে দিয়েছে॥ এখন আমরা………………
।
।
আরে আরে প্রিয় পাঠক/পাঠিকা আপনারা এখন আপাতত চোখ বন্ধ করে চলে যান, আমরা একটু রোমান্স করি, আর হ্যাঁ বিয়ের দাওয়াত রইলো, সবাই আসবেন কিন্তু বিয়েতে।
তবে হ্যাঁ খালী হাতে না,হাত একটু বাকা করে আসবেন।
.
……………♥সমাপ্ত♥……………
বিঃদ্রঃ আর হ্যাঁ যাওয়ার আগে জানিয়ে গেলে ভলো হয়, গল্পটা কেমন হয়েছে?
আরো ভালো ভালো গল্প পরতে এখানে ক্লিক করেন - Golper Dibba
0 Comments